বছরে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ব্যয় ৭৭ হাজার কোটি টাকা। ৬ রোগের পেছনেই ব্যয় সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য ব্যয়ের বড় অংশই যাচ্ছে ওষুধ কিনতে। এজন্য স্বাস্থ্য বিমা চালুর পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা। দেশে রোগীদের স্বাস্থ্য ব্যয় কেমন তা জানতে জরিপ করে সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট। সেই জরিপেই উঠে এসেছে এমন তথ্য। ২৭ হাজার ৮৩৬ রোগীর ওপর চালানো হয় জরিপটি।
জরিপে দেখা যায়, বছরে ৭৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় রোগীদের। আর শুধু ৬টি রোগের পেছনেই ব্যয় ৬৫ ভাগ। এসব রোগের মধ্যে হাড় ও মাংসপেশির রোগ, পরিপাকতন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র, রক্তনালী এবং শনাক্ত না হওয়া রোগ উল্লেখযোগ্য। এই পাঁচ রোগের পেছনেই ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ক্রিটিক্যাল ইলনেস যেটা সেটার জন্য তিন থেকে ২৫, ৩০, ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। এটা একটা পরিবারের পক্ষে বহন করা খুবই কঠিন। একটা ধনী পরিবারের পক্ষেও এটা বহন করা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ফোকাল পয়েন্ট ডা. সুব্রত পাল বলেন, ‘শুধু হাসপাতাল না, বিভিন্ন ওষুধের দোকান থেকে মানুষ যেসব ওষুধপত্র ক্রয় করে এসব কিছু মিলিয়ে দেখা গেছে প্রায় ৬৪ ভাগের মতো খরচ করে মেডিসিনের পেছনে।’
জন্মের পরই একজন শিশুর গড় চিকিৎসা ব্যয় ছয় হাজার টাকা। ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে চিকিৎসা ব্যয় সবচেয়ে বেশি। ৫০ বছর হওয়ার আগেই বছরে একজন রোগীর বার্ষিক ব্যয় ৪ হাজার ৬৭৯ টাকা। শেষ বয়সে তা ছাড়িয়ে যায় ১২ হাজার টাকা। ব্যয় কমাতে তিনটি সুপারিশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিনটি সুপারিশের মধ্যে রয়েছে–স্বাস্থ্যখাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো, এরই মধ্যে যে খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সেটি যাতে সঠিকভাবে খরচ করা যায় তাহলে আমরা আরও ভালো আউটপুট পাবো এবং সবশেষ বিমার ব্যবস্থা চালু করা।’
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সরকারি হাসপাতালে সেবার পরিধি বাড়িয়ে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।