জয়পুরহাটে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১২) বাল্যবিয়ে করার অপরাধে বরকে করাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ সময় বরের খালা ও কনের মাকেও কারাদণ্ড দেয়া হয়। নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ দণ্ডাদেশ দেন। শহরের সাহেবপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন খবর শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউএনও। বিয়েবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান বর ও কনের পরিবার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সড়কে আটকে রেখে বসানো হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। কারাদণ্ডের পর তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন শহরের সাহেবপাড়া এলাকায় ফয়জুল হকের ছেলে নাহিদ হাসান (২০), তার খালা রুমা ও কনের মা মাজেদা। এদের মধ্যে নাহিদকে এক মাস, তার খালা ও কনের মাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মেয়ে ও ছেলের পরিবার একই মহল্লার বাসিন্দা। ১২ বছর বয়সী ওই মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার বিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। স্থানীয় মৌলভি ডেকে বিয়ে পড়ানো হয়। কাজী ডাকার তোড়জোড় চলছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে হাজির হন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম।
আর এ খবরে পালিয়ে যান বর ও কনের পরিবার। তাদের পিছু নিয়ে সড়কেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বাল্যবিবাহের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কনের মাকে ১৫ দিন, বরকে এক মাস ও অভিভাবক হিসেবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বরের খালাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও ইউএনও মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে শোনা যায়, স্থানীয় মৌলভি ডেকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রি করা হয়নি বা কোনো ডকুমেন্ট নাই। মেয়ের বয়স কম, সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এ কারণে বাল্যবিবাহ আইনে মেয়ের মা, বর ও বরের খালাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’