অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মনে করেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে। এই স্বাভাবিকতাকে পরিপূর্ণ করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুতই খুলে দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি হয়। কাজেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে এটাকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ধরতে পারি না। তাই এখন পর্যায়ক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা দরকার। দ্রুতই প্রাথমিক পর্যায় থেকে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া যেতে পারে। শনিবার (২৭ জুলাই) আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক এই উপাচার্য যোগ করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যেসব দাবি-দাওয়া আছে, সেগুলো নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন আলাপ আলোচনা করে যদি সমঝোতায় পৌঁছে বিশ^বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়, সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করবে। ছেলেমেয়েরা ক্লাসে ফিরে গিলে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে যে দেশবিরোধী গোষ্ঠী রয়েছে, তারা তাদের অপকর্ম চালাতে পারবে না। তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ছাত্রদের ওপর ভর করে। ছাত্ররা যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে যাবে; তখন আর এসব গোষ্ঠীর সহিংসতার সুযোগ থাকবে না। তারা যদি নিজেরাও নামে, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনি ব্যবস্থা নেবে। সেখানে জনসাধারণের সমর্থন ও জনমত তাদের পক্ষে থাকবে না।
সরকারের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ মুহূর্তে খুলে দিলে পরিস্থিতি আবার খারাপ হতে পারে। সেক্ষেত্রে এখনই খুলে দেওয়া ঠিক হবে কি? এমন প্রশ্নে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমার মনে হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে খুলে দিলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে যেহেতু সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটেছে, সেখানে একটা সমঝোতা করার জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে পরিবেশ সৃষ্টি করা যেতে পারে। সমাধানটা বসেই করা যাবে। এটা বড় সমস্যা বলে আমার মনে হয় না। যেহেতু বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মূল দাবি পূরণ হয়ে গেছে, ছোট দাবিগুলো পূরণ করা কষ্টকর কিছু হবে না।
ভবিষতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য কী করা উচিত? এমন প্রশ্নে এই শিক্ষাবিদ বলেন, যে কোনো সভ্য সমাজে দাবি-দাওয়া থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে মতামত থাকে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থাকে। এগুলো তো গণতান্ত্রিক সমাজে সব সময় গ্রহণযোগ্য পন্থা। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন খুবই শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সেখানে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে পড়েছিল। তারা মূলত দেশবিরোধী শক্তি। ভবিষ্যতে যেন এমনটা না ঘটে, শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে, সরকারকেও সতর্ক থাকতে হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণ মানুষেরও শিক্ষা নিতে হবে, কীভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করা যায়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, তাদের ভবিষ্যতে কোন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে চায়? একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের? কিন্তু দেশের মেরুদ- যদি ভেঙে যায়, তাহলে তারা কোন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে?