ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বাজেট উপস্থাপনকালে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দরিদ্রদের পরোক্ষ করের টাকায় ধনী পরিবারের সন্তানদের প্রায় বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগদান অযৌক্তিক।
বুধবার ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক বলেন, সমাজের বিত্তবান অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার যুক্তিসংগত ব্যয় বহন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এবং তা থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করা গেলে সরকারের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঢাবির ৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এ বছরের বাজেটে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৬৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ। গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ২ দশমিক ১২ শতাংশ। বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে পাওয়া যাবে ৮০৪ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। ঘাটতি দাঁড়াবে ৫০ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
কোষাধ্যক্ষ আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ মঞ্জুরি কমিশন তার অনুদান যথাযথভাবে বৃদ্ধি করছে না, যা অপ্রত্যাশিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সহস্রাধিক শিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেকের জন্য গবেষণায় গড়ে বরাদ্দ হয়েছে ১ লাখ টাকা, যা পর্যাপ্ত নয়। এটি আরো বহুলাংশে বৃদ্ধি করা দরকার।
অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে নজর দেওয়া আজকের সামাজিক বাস্তবতায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক অসচ্ছলতা, আবাসনের সংকট, বৈষম্য, যৌন হয়রানি, র্যাগিং ইত্যাদি শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ জন্য প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।