দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ধান, পাতা, গোবর শুকাচ্ছে স্থানীয় কয়েকটি পরিবার। এতে স্কুলটির মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের দাবি, শিগগির শুকানোর কাজ বন্ধ করে মাঠটি খেলার উপযোগী করে দেয়া হোক।
এই চিত্র দেখা গেছে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নুরু মণ্ডলপাড়া এলাকার ৩৯ নম্বর বড় সিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘নুরু মণ্ডলপাড়া, ওমর আলী মোল্লার পাড়া, ইদ্রিস মিয়ার পাড়া, কিয়ামদ্দিন মোল্লাপাড়া, শাহ ব্যাপারী পাড়াসহ পাঁচটি গ্রামের ৩০৫ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। অথচ বিদ্যালয়ের পাশের বাসিন্দারা আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠে ধান, গোবর, পাতা, ফসল ইত্যাদি এনে শুকানোর কাজ করেন। বারবার বিষয়টি তাদের নিষেধ করা সত্ত্বেও কর্ণপাত করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুল পরিচালনা কমিটি, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত স্কুলের মাঠটি খালি করে শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত, স্কুল অ্যাসেম্বলি, খেলাধুলাসহ শরীরচর্চার উপযোগী করে দেয়া হোক।’
সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় এক নারী বিদ্যালয়ের মাঠে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। ফলে বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখসহ পুরো মাঠ দখল হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে ধান, পাতাসহ নোংরা আবর্জনা রাখায় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। এতে করে তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমন শেখ, ফাতেমা আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন, কামরুল ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, ‘মাঠের মধ্যে ধান শুকালে আমরা কীভাবে খেলাধুলা করবো? সরকারের কাছে আমাদের দাবি বিদ্যালয়টি এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে সেখানে ভালো একটি খেলার মাঠ তৈরি করলে আমরা খেলতে পারবো।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘স্কুলের জায়গা একেবারেই সংকুলান হওয়ায় মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলার স্থান নেই। যতটুকু রয়েছে সেখানে আশপাশের বাসিন্দারা ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করেন। তাদের কিছু বলতে গেলে নানারকম কথা শোনান তারা।’
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে খেলাধুলার প্রয়োজন রয়েছে। অথচ বিদ্যালয়ের সেই মাঠে স্থানীয় বাসিন্দারা ধান শুকিয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট করছেন। বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং সরেজমিনে দেখেছি।’ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে খেলাধুলার মাঠের বিষয়টি নিয়ে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।