ধেয়ে আসছে আর এক গ্রহাণু - দৈনিকশিক্ষা

ধেয়ে আসছে আর এক গ্রহাণু

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

সন্ধান মিলেছিল ২০ বছর আগে। বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি তখনই জানিয়ে দিয়েছিল গতি বাড়িয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ‘অ্যাপোফিস’।

‘অ্যাপোফিস’ মিশরীয় দেবতা। এই নামের অর্থ ‘গড অফ কেওস’। এই দেবতার নামানুসারেই এই গ্রহাণুর নামকরণ করা হয়েছে। 

দ্রুত গতিতে এই গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে। মনে করা হচ্ছে ২০২৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসবে অ্যাপোফিস। ওই সময় পৃথিবী ও এই গ্রহাণুর মধ্যে দূরত্ব হবে ৩২ হাজার কিলোমিটার। এই গ্রহাণুর দিকে সতর্ক নজর রাখছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।

এই সময়ের মধ্যে অ্যাপোফিস পৃথিবীর এত কাছাকাছি চলে আসবে যে তাকে পৃথিবী থেকে খালি চোখেই দেখা যাবে বলে দাবি করেছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।

তবে পাঁচ বছর পর এই গ্রহাণু পৃথিবীর কাছাকাছি এলেও ঠোকাঠুকি না লাগার সম্ভাবনাই বেশি বলে দাবি করেছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। তাঁদের অনুমান এটি পৃথিবীর কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে।

তবে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকতে পারছেন না ইসরোর বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, কোন গ্রহাণু কখন কী আচরণ করবে তার নিশ্চয়তা থাকে না। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সব সময়েই সতর্ক থেকে গবেষণা চালিয়ে যেতে হয়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অ্যাপোফিস উচ্চতার দিক থেকে পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের থেকে উঁচু। ৩৪০-৩৫০ মিটার ব্যাসের এই মহাজাগতিক বস্তুটি আয়তনে মোটামুটি তিনটে প্রমাণ মাপের ফুটবল মাঠের সমান।

৮ কোটি ৮০ লক্ষ টন টিএনটি বিস্ফোরণে যে শক্তি নির্গত হয়, এই গ্রহাণুর ধাক্কায় সেই পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।

শুধু তাই নয়, এর ধ্বংসক্ষমতা হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার ধ্বংসক্ষমতার চেয়ে ৬৫ হাজার গুণ বেশি বলে আশঙ্কা গবেষকদের।

সেই আশঙ্কা থেকেই ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই ধরনের একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়লে তা মানবসভ্যতার অস্তিত্ব সঙ্কটের কারণ হতে পারে।

মহাকাশে ভাসমান ছোট-বড় নানা রকমের পাথরের টুকরো এবং গ্রহাণুর মধ্যে যাদের দৈর্ঘ্য ১৪০ মিটারের বেশি, তাদের গতিবিধি নিয়ে শঙ্কিত থাকেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
অ্যাপোফিসের আকার ও আয়তন যথেষ্ট বড় হওয়ায় সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, যদি কোনও গ্রহাণুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে, তা হলে বিশ্বের সমূহ বিপদ এবং তার বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে।

এই উদ্বেগের বিষয়ে ইসরো যথেষ্ট অবগত। মহাকাশে বিভিন্ন গতিবিধির উপর নজরদারি ও তার বিশ্লেষণের নেটওয়ার্ক ‘নেত্র’ সজাগ দৃষ্টি রাখছে। ‘নেটওয়ার্ক ফর স্পেস অবজেক্টস ট্র্যাকিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস’— সংক্ষেপে ‘নেত্র’।

এই প্রথম নয়, এর আগেও বেশ কয়েক বার গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পেয়েছে পৃথিবী। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসেও পৃথিবীর কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছিল এই ‘গড অফ কেওস’।

চিনাবাদামের মতো আকৃতির এই অ্যাপোফিস তৈরি হয়েছে সিলিকেট জাতীয় পদার্থ, নিকেল ও লোহার মিশেলে।

২০২৯-এর ১৩ এপ্রিল গ্রহাণুটি পৃথিবীর এত কাছে চলে আসবে যে ইউরোপ, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি থেকে স্পষ্টতই তা দৃশ্যমান হবে। এমনকি পৃথিবীর কাছে চাঁদের থেকেও ১০ গুণ কাছাকাছি চলে আসবে অ্যাপোফিস।

তবে নাসার পক্ষ থেকে মহাকাশবিজ্ঞানী সারা থম্পসন জানিয়েছেন, ২০২৯ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবীর খুব কাছে এলেও আপাতত চিন্তার কোনও কারণ দেখছেন না তাঁরা। তবে ইসরোর মতো ‘গড অফ কেওস’-এর গতিবিধির দিকে নজর রাখছে নাসাও।

২০২৯ এর পর অ্যাপোফিস আবার ২০৩৬, ২০৫১ , ২০৬৬ ও ২০৬৮ খ্রিষ্টাব্দে পৃথিবীর কাছে চলে আসবে।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ - dainik shiksha পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি - dainik shiksha ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর - dainik shiksha বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত - dainik shiksha জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033841133117676