ধ্বংসস্তূপের নিচে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রিংকুর ৩৭ ঘণ্টা - দৈনিকশিক্ষা

ধ্বংসস্তূপের নিচে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রিংকুর ৩৭ ঘণ্টা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গোলাম সাঈদ রিংকু। তুরস্কে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর থেকেই ছিলেন নিখোঁজ। সোমবার ভোরের এ ভূমিকম্পে তাদের ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে  যায়। টানা দুইদিন খোঁজার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার সন্ধান মিলে। তাকে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি উদ্ধারে সহযোগিতা করেন স্থানীয় বাংলাদেশি দুই শিক্ষার্থী কাতাদাহ জাকারিয়া ও নূরে আলম। নূরে আলম নিজেও ভূমিকম্পের পরে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছিলেন। সেখান থেকে উদ্ধারের পর চিকিৎসা নিয়ে নিখোঁজ রিংকুর সন্ধানে নেমেছিলেন।  রিংকুর ধ্বংসস্তূপে কেটেছে দীর্ঘ ৩৭ ঘণ্টা। কীভাবে সেই সময় কেটেছে তার বর্ণনা দিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীর কাছে।

রিংকু আহত হয়েছেন। ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। তিনি এখন কথা বলতে পারছেন। বড় ধরনের জখম হয়নি শরীরে। তবে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা রয়েছে। যখন ভূমিকম্প অনুভূত হয় তখন তিনি তার নিজের রুমে ছিলেন না। বাসার ড্রয়িং রুমে শোফায় শুয়ে ছিলেন। ওই স্থানেই বাসা থেকে বের হওয়ার মূল দরজা। তিনি হঠাৎ দেখতে পান সবকিছু তার মাথার উপর। ঘোর অন্ধকারে কোনোকিছুই বুঝে উঠতে পারেন নি। তাদেরই বাসার এক বিদেশি শিক্ষার্থী বের হয়েছেন জানালা বা কোনো ফাঁকা জায়গা দিয়ে তিনি সে শব্দ শুনতে পেয়েছেন। তবে নিজে বের হওয়ার কোনো পথ পাচ্ছিলেন না। সে অবস্থায়ই নামাজ পড়েন। 

একটা সময়ে তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। সংজ্ঞা ফিরলে কোথাও থেকে একটি আলো ঢোকার ফাঁকা স্থান দেখতে পান। কিন্তু নড়তে পারছিলেন না। এক হাত দিয়ে মূল দরজা খুলতে গেলে সেটিও পড়ে যায়। তিনি আর কোনো দিশা পাচ্ছিলেন না। একবার উপর থেকে ডাকাডাকির আওয়াজ শুনেছেন বলে মনে হয়েছে। তবে তা পুরোপুরিভাবে মনে করতে পারছেন না। এরপর আর কোনো কিছুর আওয়াজ না পেয়ে জীবনের মায়া ছেড়ে দেন।  রিংকুকে উদ্ধারের বর্ণনা দেন বাংলাদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী কাতাদাহ জাকারিয়া। বলেন, আমি ভূমিকম্পের পরপরই ডরমিটরি থেকে বের হয়ে যাই। এ জন্য নিরাপদে ছিলাম। পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোর ধস দেখতে পাই। সোমবার সকাল ১০টায় আমি রিংকু ও নূরে আলম ভাইয়ের খোঁজে তাদের বাসায় গিয়ে দেখি তাদের বাসাসহ আশেপাশে সব ধ্বংসস্তূপ।  আমি তাদের ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেক ডাকাডাকি করলেও সাড়া পাইনি। আমি প্রায় এক ঘণ্টা তাদের ডাকলেও সাড়া মিলে না। পরবর্তী দিন আবার আসি। আগের দিন ধ্বংসস্তূপ থেকে ফেরা নূরে আলমও সঙ্গে ছিলেন।  আমরা দিনভর উদ্ধারকারী টিমের সঙ্গেই তাদের সহযোগিতায় ছিলাম। আমরা রিংকুকে একের পর এক ডেকে যাচ্ছিলাম। কোনো সাড়া আসছিল না। ঠিক সন্ধ্যার পূর্বে যখন উদ্ধারকারী টিম তার কাছাকাছি যায় তখন আমাদের ডাকে সাড়া পাই। 

তখন উদ্ধারকারী টিম নিশ্চিত হয় যে, কেউ নিচে আছে। কিছু সময় পরেই তাকে বের করে নিয়ে আসা হয়।  যখন তাকে বের করা হয় তখন তার বাম হাত থেকে রক্তপাত হচ্ছিল। এ ছাড়াও শরীর কিছুটা ফুলে যায়। আমরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। তিনি সাড়া দেন। তখন অবস্থা গুরুতর ছিল। এরপরেই আমাদের ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ফ্যাকাল্টিতে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। আমি একই ফ্যাকাল্টির শিক্ষার্থী হওয়াতে তার সঙ্গে থেকে পর্যবেক্ষণ করছি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তার বাম হাতে জখম হলেও বড় কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। দীর্ঘ সময় ধ্বংসস্তূপে অন্ধকার থাকায় কিছুটা ভীতি ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশে বগুড়ার ছেলে রিংকু ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বৃত্তি নিয়ে তুরস্কে পড়তে যান। কাহরামানমারাস সুতচু ইমাম ইউনিভার্সিটির জিওগ্রাফির শিক্ষার্থী। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি পার্ট-টাইম চাকরি করতেন। ওদিকে উদ্ধারের পর রিংকু তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন। মাকে জানান, আমি বেঁচে আছি। শিগগিরই দেশে ফিরবো।

সূত্র : মানবজমিন 

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033140182495117