আমাদের বার্তা, ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কোনো নির্দিষ্ট সময়ের কবি নন, তিনি তাঁর কবিতা, গান ও সাহিত্যে অনাগত সময়কে ধারণ করেছেন। তিনি যুগোত্তীর্ণ ও কালোত্তীর্ণ একজন মানবতাবাদী ও সাম্যের কবি। এজন্য নজরুল চর্চার মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য, রাষ্ট্রের বিভেদ, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যা, বর্বরতা, হত্যাযজ্ঞ ও অমানবিক অত্যাচার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
শনিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি প্রাঙ্গণে কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য যুদ্ধ বন্ধের এই আহ্বান জানান।
জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনী খিলখিল কাজী প্রমুখ। বাংলা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. ফাতেমা কাওসারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একই বিভাগের অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ সালেকীন) 'অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল' শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন। সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সাম্যের কবি, অসাম্প্রদায়িক ও মানবতার কবি। তিনি মানুষের জন্য কবিতা ও গান লিখেছেন, মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায়। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম উপলব্ধি করে অসহায়, দরিদ্র, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কথা সকলকে ভাবতে হবে। তাঁর মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী চেতনা ধারণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে যুদ্ধবিগ্রহ চলছে, তা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। ফিলিস্তিনে বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েল যে হত্যাযজ্ঞ, বর্বরতা, নির্যাতন ও অমানবিক অপরাধ চালাচ্ছে, তা বন্ধ করে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।