নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার ঠেকাতে প্রশিক্ষণের ব্যাপকতা বাড়ান - দৈনিকশিক্ষা

নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার ঠেকাতে প্রশিক্ষণের ব্যাপকতা বাড়ান

ইমতিয়াজ মুরাদ |

গতানুগতিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে আসা কারিকুলামের মতো যদি বর্তমান নতুন কারিকুলামটিও পরিমার্জিত কারিকুলাম হতো তাহলে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে কারিকুলাম বিস্তরণের প্রশিক্ষণ যে মাত্রায় দেয়া হয়েছিলো সে মাত্রায় সেসব স্টেকহোল্ডারের মাঝে শিক্ষাক্রম বিস্তরণের উদ্দেশে প্রশিক্ষণ দিলেই হতো। কিন্তু শিক্ষাক্রম নিয়ে যখন নেতিবাচক কথা উঠছে তখন প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলে আসা কারিকুলামের খোলনলচে পাল্টে ফেলা নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে নামা হয়েছে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শিক্ষাক্রমের মতো স্বল্প পরিসরের প্রস্তুতি নিয়ে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযোগী নাগরিক তৈরির জন্য যেহেতু শিক্ষাক্রম তাই বেশিসংখ্যক স্টেকহোল্ডারের কাছে শুরুতেই এর বিস্তরণ প্রয়োজন, ধীরে ধীরে নয়। যদিও নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে নামা হয়েছে পূর্বের ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শিক্ষাক্রমের মতো স্বল্প পরিসরে শিক্ষাক্রম বিস্তরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে।

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে যেসব দিক তেমন কোনো চ্যালেঞ্জই হওয়ার কথা ছিলো না সেসবই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারিদিক থেকে আংশিক দেখে পুরোটা না বুঝেই-কেউ কেউ কলাম লিখছেন, অভিভাবকরা শঙ্কিত হয়ে নানা আচরণ করছেন, কেউ কেউ সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করছেন। এসব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিরোধিতা করার মানসিকতা সম্পন্ন একটা শ্রেণিও অবশ্য রয়েছেন যারা সবসময়ই নেতিবাচক কাজ করেন, নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে পানি ঘোলাটে করার জন্য যারা সবসময়ই থাকবেন। এসব স্টেকহোল্ডাদের মাধ্যমে কেনো এতো শক্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি হলো তা ব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংশ্লিষ্টজনের কম-বেশি অনুমেয়। তাই লেখার কলেবর বৃদ্ধি করে সে ব্যাপারে এখানে আর উল্লেখ করতে চাই না। 

যে স্টেকহোল্ডারদের শিক্ষাক্রম বিস্তরণের প্রশিক্ষণ যে মাত্রায় দিলে এ ধরনের উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ নিরসন করা সম্ভব তার একটু ধারণা দিতে চাই। নতুন শিক্ষাক্রম গতবছর বাস্তবায়নের শুরুতেই শুধু ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ না দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া গেলে ভালো হতো। যেটা দেরিতে হলেও এ বছর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

যেহেতু ৩০০ বছরের মধ্যে বড় ধরনের একটা পরিবর্তন এই কারিকুলাম তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বাদে অন্য পদের কর্মচারীদেরও তাদের উপযোগী করে সংক্ষিপ্ত আকারে কারিকুলাম রূপরেখা এবং শিখন-শেখানোর পদ্ধতির ওপরে একদিন হলেও প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে চোখে পড়ে এমন সাধারণ দিকগুলো দ্রুত বিস্তরণের সুবিধার্থে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শুধু কারিকুলাম রূপরেখার ওপর প্রশিক্ষণ না দিয়ে একাডেমিক শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা দেয়া প্রয়োজন। সহকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকেও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মতো টপিক অন্তর্ভুক্ত করে প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত।

প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ-ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষে আগ্রহীদের আবেদন প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়ে সভাপতিসহ ডিগ্রিধারী সবাইকে সম্ভব হলে প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত শিক্ষাক্রম রূপরেখাকে সহজপাঠ্য করে তুলে ধরে তার সঙ্গে একাডেমিক শিখন-শেখানো অংশ যেমনভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা তুলে ধরে একটা প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল প্রস্তুত করে। ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালের ন্যায় একটা ম্যানুয়াল প্রস্তুত করে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগ্রহী অভিভাবকদের একটা অংশকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা উচিত। যেসব শিক্ষা কর্মকর্তা কারিকুলাম রূপরেখা ছাড়া একাডেমিক শিখন-শেখানো কার্যক্রমের ওপর কমপক্ষে ৫-৭ দিনের প্রশিক্ষণ পাননি তাদের পুনরায় কমপক্ষে ৪ দিনের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।

এ পরিস্থিতিতে কারিকুলাম ডিসেমিনেশন স্কিমে প্রশিক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধি করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আর যেহেতু কারিকুলাম ডিসেমিনেশন স্কিমে প্রশিক্ষণ বাজেট বাবদ একটা পরিমাণ অর্থ অনুমোদিত হয়ে আছে তাই বললেই প্রশিক্ষণ বাজেট বৃদ্ধি করা রাতারাতি সম্ভব নয় সেহেতু বিদ্যমান প্রশিক্ষণ বাজেটের ব্যয় বিভাজনে একটু পরিবর্তন এনে আরো বেশিসংখ্যক স্টেকহোল্ডারকে বেশিদিনের প্রশিক্ষণ দেয়া যায় কি-না তা ভেবে দেখা যেতে পারে।

দেরিতে হলেও ব্যাপক আকারে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে যে একটা বোঝাপড়াহীন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা কেটে যাবে বলে আমার ধারণা। কেননা অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে তা হচ্ছে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষক-কর্মকর্তা-ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্য বা শিক্ষিত অভিভাবকদের যখন কেউ নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রশ্ন করছেন তাদের কেউ কেউ নেগেটিভ উত্তর দিচ্ছেন। যা শিক্ষক্রম নিয়ে নানা গুজব ও 
অপপ্রচার বাড়াচ্ছে।

লেখক : ইমতিয়াজ মুরাদ, থানা একাডেমিক সুপারভাইজার

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ - dainik shiksha চট্টগ্রামে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২ ঢামেকে একজনের মৃত্যু - dainik shiksha ঢামেকে একজনের মৃত্যু জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ - dainik shiksha জবির কোটা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ৪ বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ - dainik shiksha বেরোবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০০ শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর - dainik shiksha শহীদ মিনার এলাকায় অধ্যাপককে মারধর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের - dainik shiksha সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেয়া হবে : কাদের সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই: ঢাবি উপাচার্য যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো - dainik shiksha যারা নিজেদের রাজাকার বলেছে তাদের শেষ দেখে ছাড়বো সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha সায়েন্সল্যাবে কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.023998975753784