নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর মৃ*ত্যুবার্ষিকী আজ - দৈনিকশিক্ষা

নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর মৃ*ত্যুবার্ষিকী আজ

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম স্থপতি নবাব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। নওয়াব আলী চৌধুরী ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ীর বিখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

  

তিনি পূর্ব বাংলার টাঙ্গাইলস্থ ধনবাড়ির নবাব ছিলেন। তিনি অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তার দৌহিত্র মোহাম্মদ আলী পাকিস্তানের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া তার এক পুত্র সৈয়দ হাসান আলী চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।

নওয়াব আলী চৌধুরী শৈশবে গৃহ শিক্ষকের কাছে আরবি, ফার্সি, ও বাংলায় বিশেষ শিক্ষা লাভ করেন। তার আনুষ্ঠানিক লেখাপড়া শুরু হয় রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে এবং পরবর্তীতে তিনি কলকাতার বিখ্যাত সেন্ট জোভিয়ার্স কলেজ থেকে এফএ পাস করেন।

১৮৯৫ থেকে ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত নওয়াব সাহেবের কর্মতৎপরতা ছিলো প্রধানত সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রিক। ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে মিহির ও সুধাকর পত্রিকা একত্রিত হয়ে সাপ্তাহিক মিহির-সুধাকর নামে আত্মপ্রকাশ করে। এর মালিক ছিলেন নওয়াব আলী চৌধুরী। এজন্য একটি প্রেস কিনে তিনি কলকাতায় তার নিজ বাসভবনে স্থাপন করেন।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, পণ্ডিত রেয়াজউদ্দিন আহমদ আল মাশহাদী, কবি মোজাম্মেল হকের সাহিত্য প্রকাশনায় নওয়াব আলী চৌধুরীর দান ছিলো অপরিসীম। ফলে উল্লেখিত লেখকরা তাদের বিভিন্ন প্রকাশনা নওয়াব আলী চৌধুরীর নামে উৎসর্গ করেন। শিক্ষানুরাগী অনন্য জমিদার নওয়াব আলী চৌধুরী বিভিন্ন গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত বইগুলো হলো, ঈদুল আযহা, মৌলুদ শরীফ, ভারনাকুলার এডুকেশন ইন বেঙ্গল, প্রাইমারি এডুকেশন ইন রুরাল এরিয়াস্।

১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকে নওয়াব আলী চৌধুরী রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রবর্তকদের প্রবল বাঁধার মুখে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হয়ে পূর্ববাংলা ও আসাম নামক একটি মুসলিম প্রধান প্রদেশ জন্ম লাভ করলে নওয়াব আলী চৌধুরী একটা সর্বভারতীয় মুসলিম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তিনি মুসলমানদের অনগ্রসরতার জন্য অশিক্ষাকে দায়ী করেন। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ কার্যকরের দিন ঢাকার নর্থব্রুক হলে তার ও ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর উদ্যোগে প্রাদেশিক রাজনৈতিক সংগঠন গঠিত হয়।

১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট ঢাকার কার্জন হলে ল্যান্সলট হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস বেইলির যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি মানপত্রে নবাব সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জানুয়ারি লর্ড হার্ডিঞ্জের ঢাকায় অবস্থানকালে নওয়াব সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলীসহ ১৯ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে মুসলমানদের যে সমূহ ক্ষতি হচ্ছে সে কথা তুলে ধরেন। এ লক্ষ্যে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নাথান কমিটি গঠিত হলে নওয়াব আলী চৌধুরী এর অন্যতম সদস্য হন। এর অধীনে ছয়টি সাব কমিটি গঠিত হলে তিনি ছয়টি বিভাগের সদস্য নিযুক্ত হন।

 

১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে আর্থিক সংকটের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ চাপা পড়ে যায়। সে সময় নওয়াব আলী চৌধুরী ইম্পেরিয়াল কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মার্চ ইম্পেরিয়াল কাউন্সিলের সভায় তিনি বিষয়টিকে আবার উপস্থাপন করেন। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ মার্চ ভারতীয় আইনসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল অ্যাক্টে পরিণত হয় এবং ২৩ মার্চ তা গভর্নর জেনারেলের অনুমোদন লাভ করে। লর্ড হার্ডিঞ্জ কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নয় বছর পর ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথারীতি ক্লাস শুরু হয়। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বাবদ ১৬ হাজার টাকার একটি তহবিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে অর্থাভাব দেখা গেলে নিজ জমিদারীর একাংশ বন্ধক রেখে এককালীন ৩৫ হাজার টাকা দেন।

নওয়াব আলী চৌধুরী ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রী। শিক্ষাবিস্তারে তার আন্তরিকতার জন্য সে সময় তাকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এদেশে নওয়াব আলী চৌধুরী ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে জমি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিজ এলাকা ধনবাড়িতে নওয়াব ইনস্টিটিউট নামের একটি হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া সোনাতলা, কোদালিয়া, গফরগাঁও, পিংনা, জঙ্গলবাড়ি, হয়বতনগরসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সহায়তা করেন। নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের ইডেন ক্যাসেলে মৃত্যুবরণ করেন।

আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা - dainik shiksha আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল - dainik shiksha এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর - dainik shiksha এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ - dainik shiksha হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি - dainik shiksha ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038888454437256