দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: সাধারণ তহবিলের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় না করে নিজেদের জন্য গাড়ি কেনার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ((এনএসইউ) ট্রাস্টি বোর্ডের আট সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ মামলার আসামিরা হলেন, তানভীর হারুন (সাবেক এমপি ইউসূফ আব্দুল্লাহ হারুনের ছেলে), বেনজীর আহমেদ, এম এম কাশেম, রেহেনা রহমান, মো.শাহজাহান, ইয়াসমিন কামাল, ফাওজিয়া নাজ।
দুদকের অভিযোগ থেকে আরও জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের টাকা ব্যবহার করে বিলাসবহুল ১০টি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। ব্যবহার ও বিক্রয় বাবদ ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৫টাকা খরচ হয়েছে। জ্বালানি ও চালকের বেতন: ৮৩ লাখ ২৮ হাজার ৫০৩ টাকা। মোট ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫৮ টাকা খরচ করা হয়েছে।
দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, পরস্পর যোগসাজশে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসূফ আব্দুল্লাহ হারুনের ছেলে তানভীর হারুনসহ আসামি করা হয়েছে ৮জনকে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ফি ও তহবিলের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় খাতে বব্যহার না করে, বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে দশ কোটি টাকা। গাড়ি কেলেঙ্কারির ঘটনায় মামলা করেছে দুদক।
যদিও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় যে ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত তার ডিডে বলা হয়েছে, এ ট্রাস্ট মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হবে।
এর আগেও ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অক্টোবর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অর্থ পাচার মামলার চার্জশিটের অনুমোদন দেয় দুদক।
ওই মামলার আসামিরা ছিলেন—সাবেক চেয়ারম্যান ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজ আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য এম.এ. কাশেম, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী, চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, পরিচালক আনোয়ারা বেগম ও সৈয়দ এ. কে. আনোয়ারুজ্জামান।
চার্জশিটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ বা অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদন বা সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ অপরাধজনকভাবে প্রদান বা গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরবর্তীতে আবার নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনায় ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে খ্রিষ্টাব্দের ৫ মে ট্রাস্টি বোর্ডের পাঁচজনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।