স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার এবং একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে এক জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবের বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বুধবার (১২ জুলাই) ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া– সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
শাস্তির মুখে পড়া এই জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবের নাম এরশাদ উদ্দিন। তিনি বর্তমানে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপপরিচালক পদে কর্মরত রয়েছেন। বিসিএস ৩৩তম ব্যাচের এই কর্মকর্তার বাড়ি কিশোরগঞ্জে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরশাদ উদ্দিন আগামী দুই বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিত থাকবেন।
এ প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে এরশাদ উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একই বিধিমালার অনুযায়ী তাঁকে আগামী দুই বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমন করা হয়। অর্থাৎ তিনি ষষ্ঠ গ্রেডের বেতন স্কেলের নিম্নতম ধাপ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা মূল বেতন পাবেন।
এই অবনমনকে ‘লঘুদণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, দণ্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্তমানে প্রাপ্ত বেতন ধাপে ফিরে যাবেন। তবে তিনি বকেয়া কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ গ্রেডে এরশাদ উদ্দিন এখন মূল বেতন ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা। নিম্নতম ধাপে সেটি কমে হবে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা। সে হিসাবে তাঁর মূল বেতন কমবে ১৬ হাজার ৯৮০ টাকা।
সূত্র বলছে, এরশাদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতে তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান। সে পরিপ্রেক্ষিতে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত শুনানিতে তিনি বক্তব্য দেন। তবে সে বক্তব্য যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি তদন্ত কর্মকর্তার। চলতি বছর মার্চে তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, এরশাদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত ৬ জুলাই সরকারের উপসচিব মেহেদী হাসানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএস ২১তম ব্যাচের ওই কর্মকর্তা সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক কাউন্সেলর। তাঁর বিরুদ্ধে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়ে নির্যাতনের শিকার নারীদের দূতাবাসের সেফহোমে অপ্রয়োজনে ডেকে নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারের নামে অশ্লীল প্রশ্ন, হেনস্তা ও ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে।