সারা বিশ্বে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই দিনটিকে শুধুমাত্র নারীদের জন্যই উৎসর্গ করা হয়েছে। পৃথিবীতে নারী কখনো মা হয়ে, কখনো বোন হয়ে, কখনো প্রেমিকা আবার কখনো অর্ধাঙ্গী রূপে আর্বিভূত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক কঠিন দায়িত্ব নারীদেরও সামলাতে হয়। এক কথায় সুখের মন্ত্র যেন তাদেরই হাতে। ঘরে-বাইরে সব দিকে নারীদেরই নজর রাখতে হয়। তাইতো আমাদের অর্জিত এই দিনটিকে অবশ্যই খুব সুন্দরভাবে উদযাপন করা উচিত। উৎসব মানে সেখানে কাজের চাপ থাকবেই। তবে বিশেষ নারী দিবসের এ দিনটিতে কাজের চাপে নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না, নিজেকে সাজিয়ে তুলুন অপরূপ রূপে।
নারী দিবস মানেই বেগুনি রঙের পোশাক। তাই এই রঙটিকে মাথায় রেখে শাড়ি কিংবা থ্রি-পিস পরতে পারেন। তাছাড়া ফতুয়া বা কুর্তিও বেশ মানানসই হবে। সঙ্গে হালকা প্রসাধনীর ছোঁয়া রাখুন। আর অবশ্যই পোশাকের সঙ্গে মানানসই ছোট কিছু গয়না পরতে পারেন। কর্মজীবী নারী হলে অবশ্যই সাধারণভাবে উৎসবের সাজে নিজেকে রাঙ্গিয়ে তুলুন, অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে একটু অন্যরকম নান্দনিক সাজে নিজেকে উপস্থাপন করুণ। সুযোগ পেলে বেড়িয়ে পড়ুন নারী দিবসের নানা আয়োজনে।
বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে সারাবিশ্বের মানুষ। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সংক্ষেপে আইডব্লিউডি বলা হয়ে থাকে। শ্রমিক আন্দোলন থেকেই উদ্ভূত হয় নারী দিবসের ধারণা। পরবর্তীতে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃত পায় এবং প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হতে থাকে।
প্রথম ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ওই বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আমেরিকায় নারী দিবস (National Woman's Day) উদযাপন করা হয়েছিল। সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউ ইয়র্কে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে বস্ত্রশ্রমিকরা তাদের কাজের সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ আর সমমানের বেতনের দাবিতে চলে বনধ।
১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে কোপেনহেগেনের উদ্যোগের পর, ১৯ মার্চ অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস চিহ্নিত হয়েছিল। নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্য প্রতিবাদ করেন লক্ষ মানুষ। একই সঙ্গে রাশিয়ান মহিলারাও প্রথমবার ২৮ ফেব্রুয়ারি 'রুটি ও শান্তি'র দাবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতা করেন। ইউরোপের নারীরা ৮ মার্চ শান্তি বিষয়ক কার্যক্রমকে সমর্থন করে বিশাল মিছিলে নামেন। ১৯১৩-১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিবাদ জানানোর একটি প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ দিনটিকে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন, সব মেয়েকে বাড়িতে বা অফিসে বিশেষ উপহার দেওয়া হয়। হাতে তুলে দেওয়া হয় গোলাপ, উপহার, শাড়ি এবং চকলেট। অনেক অফিস পার্টিও দিয়ে থাকে। কিছু অফিসে এই দিন হাফ ডে ছুটিও থাকে মহিলা কর্মীদের।