দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি : শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় বাংলাদেশের মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নারীর প্রতি মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে, নারীকে মানুষ ভাবতে হবে। আর নারী-পুরুষ সমতা নয়, ন্যায্যতা দিতে হবে। সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, আমাদের এই সিভিলাইজেশনই হতো না, যদি নারীরা না থাকতো। নারী-পুরুষ সবাই মিলেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বঙ্গবন্ধু নারীদের অনেক সম্মান করতেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিতা নারীদের তিনি বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়েছিলেন। সেই নারীদের পরিবার-ঠিকানা কিছুই ছিলো না। বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতাকে সাথে নিয়ে তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। নারীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শই আমার দর্শন।
উপাচার্য আরো বলেন, আমাদের জিডিপিতে নারীর অবদান মাত্র ২০ শতাংশ। কিন্ত নারীরা গৃহে যে কাজ করে সেটাকে যদি আমরা স্যাটেলাইট কাউন্টে আনি, তাহলে নারীদের জিডিপিতে অবদান ৪৮ শতাংশ। আমাকে আবার সুযোগ দেয়া হলে আমি নারী হয়েই জন্মাতে চাই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী, চল্লিশ শতাংশ নারী শিক্ষক। আমি আমার শিক্ষার্থীদের বলি, নারীকে মানুষ ভাবতে শেখো। বাংলাদেশের মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম জাহান বলেন, নারীতে বিনিয়োগ কখনো বিফলে যায় না। নারীতে বিনিয়োগযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নারীর সমতা, সক্ষমতা ও সুযোগের গুরুত্ব দেয়া। আবার শুধুমাত্র নারীতে বিনিয়োগ করলেই হবে না, পুরুষেও বিনিয়োগ করতে হবে। আর এভাবেই বিনিয়োগের অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মেয়ের কয়েকদিন আগে সাফ চ্যাম্পিয়ন হলো। কিন্ত আমরা পত্রিকার পাতায় তাদের বেতনের সঙ্গে পুরুষদের বেতন বৈষম্যের খবর দেখতে পাই। আমরা বলি নারীরা অর্ধেক আকাশ ধরে আছে। নারীকে অর্ধেক আকশ ধরতে না দিয়ে পুরো আকাশ ধরতে দিন। আমরা পুরুষরা ও নারীরা সেই আকাশের নিচে ভালো থাকব।