যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় হিংসা-বিদ্বেষ বন্ধের লক্ষ্যে একটি বিল পাস হয়েছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) অঙ্গরাজ্যটির কাউন্সিলে এ প্রস্তাব পাস হয়ে। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা এখন থেকে অবাধে ধর্ম পালনের সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করার পর নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলগুলোতে ধর্মবিদ্বেষী হামলা, গালিগালাজ পরিস্থিতির খবর আসতে থাকে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ছিল। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি নেতৃত্বাধীন অলাভজনক সংগঠন ‘স্যাফেস্ট’সহ ৩৪টি সংগঠন সরব হয়ে উঠে। এর মধ্যেই নিউ ইয়র্কের সিটি কাউন্সিলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিরওম্যান শাহানা হানিফের উত্থাপিত এ প্রস্তাবটি প্রস্তাব পাস হয়।
অধিবেশনে উপস্থিত ৪৮ কাউন্সিলরম্যানের সবাই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে এখন ধর্মীয় কারণে কেউ কারো সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারবে না। দুপুরে পরিবেশিত হবে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী খাবার; তাতে হালাল-হারাম নিয়ে শঙ্কা তৈরির সুযোগ বন্ধ হবে।
শাহানা বলেন, সিটি কাউন্সিলে বিদ্বেষমূলক হামলা বন্ধ সম্পর্কিত টাস্কফোর্সের কো-চেয়ার হিসেবে আমি নিজেকে অত্যন্ত গর্বিত মনে করছি যে-এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রতি সকল সহকর্মীর অকুণ্ঠ সমর্থন পেলাম।
এই রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে শিক্ষা বিভাগ- সংশ্লিষ্ট সকল ধর্মভিত্তিক সংগঠনের পরামর্শ অনুযায়ী সর্বজনীন কারিকুলাম তৈরি করতে পারবে এবং তা শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-কর্মচারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
ধর্মীয় কারণে কেউ আর বিদ্বেষী আচরণের শিকার হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ রচনার ক্ষেত্রে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির বিকল্প নেই।
বিশেষ করে বহুজাতিক এ সমাজে সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষেরা ভীতিহীনভাবে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে সক্ষম হলেই আমেরিকার বৈচিত্রময় জীবনধারা গোটাবিশ্বকে আরো আকৃষ্ট করবে।
আন্দোলনকারী সংগঠন ‘স্যাফেস্ট’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মাজেদা এ উদ্দিন বলেন, 'এর আগে আমাদের চেষ্টায় নিউ ইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলোতে ঈদের দুদিন ছুটি এবং হালাল খাদ্য পরিবেশনের বিধি হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ধর্মীয় অবয়বে অবাধে শিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে। স্কুলে তারা নামাজ আদায়েও বাধাগ্রস্ত হবে না।