শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বেঞ্চ সবই আছে নেই শুধু ক্লাসরুম! শ্রেণিকক্ষ তিন বছর ধরে না থাকায় রোদে গাছের নিচে বসে, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় ক্লাস করছেন বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে সময়ে ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
জানা গেছে, ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে উত্তর টিয়া সরকারি প্রাথমিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই টিন সেডের ঘরে পাঠদান করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একতলা ভবন নির্মাণ করে। ভবন নির্মাণের ১০ বছরের মাথায় ফাটল ধরে পলেস্তারা খসে পড়ে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ ওই বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকেই জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। গত তিন বছর ধরে এভাবেই চলছে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান।
সোমবার সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় এবং তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরিত্যক্ত স্কুল ভবনের বারান্দায় পাঠদান করানো হচ্ছে। অন্যদিকে টিন সেডের একটি ভবনে অপর একটি শ্রেণির ক্লাস করানো হচ্ছে। স্কুলটির শিক্ষার্থী মরিয়াম, মারিয়া ইসলাম, আবু হানিফ, সাকিল, হাসিবুর রহমান, মাহফুজ ও নাজমা আক্তার প্রচন্ড রোদের মধ্যে গাছ তলাতে বসে ক্লাস করেছেন।
শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কখনো গাছতলায় আবার কখনো পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় বসে ক্লাস করতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি ক্লাস তৈরি করা হলে আমাদের সকল কষ্ট লাঘব হবে।
এদিকে স্কুলটির সহকারী শিক্ষক আব্দুল মান্নান, ডেইজি বিশ্বাস ও নাসরিন আক্তারের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক শিক্ষাডটকমের। তারা জানান, জায়গা সংকুলান হওয়ায় পরিত্যাক্ত ভবনের বারান্দায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। আবার প্রচন্ড রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে বারান্দায় ক্লাস করানো হচ্ছে। গত তিন বছর ধরে এভাবেই পাঠদান চলছে। এতে আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানের অভিযোগ নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করলেও ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন বলেন, তিন বছর ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে বেশ সমস্যায় আছি।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সফিকুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের চাহিদা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি।
এদিকে দ্রুত বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আশ্বস্ত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।