আগামীকাল সোমবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদ-উল আজহা উদযাপিত হবে। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদ-উল আজহা বা ‘কোরবানির ঈদ’ উদযাপিত হয়।
কোরবানির ইতিহাস সুপ্রাচীন। হজরত ইব্রাহিম (আ.)–এর সুন্নত অনুসরণ করেই সারা বিশ্বের মুসলমানরা ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়ে থাকেন। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানির জন্য মহান আল্লাহর নির্দেশ পেয়েছিলেন। পরপর দুবার তিনি পশু কোরবানি করেন।
ঈদের জামায়াতের আগে খুতবায় হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)–এর কোরবানির এই অমর কাহিনি তুলে ধরেন ইমামরা। এর মধ্য দিয়ে বিনম্রচিত্তে তাঁদের স্মরণ করবেন সারা বিশ্বের মুসলমানরা।
১০ দিন আগেই ঠিক হয়ে যায় ঈদের দিনক্ষণ। সে অনুসারে পশু কেনাসহ ঈদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে থাকেন সবাই। কোরবানি দেয়া আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ওয়াজিব। ১০ জিলহজ পবিত্র ঈদ-উল আজহা অনুষ্ঠিত হলেও পরের দুই দিন অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও কোরবানি করার বিধান রয়েছে। আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে সমস্ত লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্রোধ, স্বার্থপরতা তথা মানুষের ভেতরের পশুত্বকে ত্যাগের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি লাভের ভেতরেই রয়েছে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য।
এ ঈদ দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেই পরিচিত। কোরবানির পশু কেনা, তার যত্ন–পরিচর্যাতেই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ঈদের জামাত
প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র ঈদ-উল আজহার নামাজের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত ৮টায়, তৃতীয়টি ৯টায়, চতুর্থটি সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদের জামাতে সর্বস্তরের শত শত মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদ-উল আজহার নামাজ আদায় করবেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গতকাল শনিবার জানান, রাষ্ট্রপতি তার পরিবারের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল আজহার নামাজ জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টায় আদায় করবেন। রাষ্ট্রপতি ঈদগাহে পৌঁছলে প্রধান বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপ্রধান ঈদগাহে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
তবে প্রতিকূল আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রপতি সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।