পবিপ্রবিতে কর্মকর্তা পরিষদের লাগাতার আন্দোলনে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

পবিপ্রবিতে কর্মকর্তা পরিষদের লাগাতার আন্দোলনে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

পবিপ্রবি প্রতিনিধি |

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্রমাগত আন্দোলন ও কর্মবিরতিতে স্থবির পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)। যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে সীমাহীন ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে লাগাতার এ আন্দোলনে '৬ দফা' দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে পবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত যাদের মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে প্রশাসনের বাহিরে বদলি করা, অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে আপডেট কমিটি রিপোর্ট রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদন করা, সহকারী রেজিস্ট্রার পদের স্কেল ষষ্ঠ  গ্রেড এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদের স্কেল চতুর্থ গ্রেডে উন্নীত করা, অর্গানোগ্রাম কমিটিতে অফিসার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি রাখা, প্রতি অর্থবছরে ৩টি বাছাই বোর্ড এবং ৩টি রিজেন্ট বোর্ডের সভা আহ্বান করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ সাইদুর রহমান জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়াজকুরুনী স্বাক্ষরিত উক্ত দাবি সংবলিত আল্টিমেটাম কপি রেজিস্ট্রারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং ৩০ জানুয়ারির মধ্যে দাবি আদায় না হলে কর্মকর্তাগণ কর্মবিরতি এবং অবস্থান ধর্মঘটসহ সকল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে গত ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের ৫০ তম সভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদন্নোয়নের বিষয়টি আলোচনা হলে তা বোর্ড সদস্যদের আপত্তির মুখে অনুমোদন হয়নি।

গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান এ কর্মসূচী ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যহত করছে। সমসাময়িক মুহুর্তে বিভিন্ন অনুষদের ভর্তি ও ফাইনাল পরীক্ষা চলমান। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তীব্র শব্দ ও কোলাহল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে সমস্যার সৃষ্টি করছে। লাইব্রেরী শাখা, অর্থ ও হিসাব শাখা, শিক্ষা ও বৃত্তি শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে জনবল না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। কেউ কেউ সার্টিফিকেট উত্তোলন ও আর্থিক লেনদেন করতে না পারায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তাদের সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রুপের পরীক্ষা থাকে। তীব্র শব্দ ও কোলাহলে পরীক্ষা দেওয়া খুবই কষ্টকর। তাছাড়া প্রশাসনে কোন কাজের জন্য যাওয়া হলে কাউকেই পাওয়া যায় না।

খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ ফজলে রাব্বি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানতম নিয়ামক হল শিক্ষা ও শিক্ষার্থী, আর সেই শিক্ষার্থীই যখন সমস্যার সম্মুখীন হয় তখন সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব সহকারে ভাবা উচিত। অতিশীঘ্রই এই অবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সমাধানের পথে আসবে বলে আমি আশা প্রকাশ করছি।

এতো কিছুর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোন নিদর্শনা নেই। উল্টো অফিসার্স এসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়, তাদের দাবি আদায়ে রোববার(৫ ফেব্রুয়ারী) থেকে শুরু করে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করবেন।

এ বিষয়ে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরণের পর্যন্নোয়ন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নীতিমালায় নেই। যদিও খোঁজ নিয়ে জানা যায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরণের পর্যান্নোয়ন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার  মোঃ ওয়াজকুরুনীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয় একটি সায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তবে পবিপ্রবি ২৩ বছরেও তার সে সায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। একজন কর্মকর্তা যদি একটি নির্দিষ্ট সময় পর তার পর্যন্নোয়ন না পান তবে তার কর্মস্পৃহা হারিয়ে যায়। যদি ইউজিসির কথা বলেন সেখানে একজন কর্মকর্তা ৯ম গ্রেডে যোগদান করে ২য় গ্রেড পর্যন্ত যেতে পারে সেখানে আমরা একই যোগ্যতা সম্পন্ন হয়েও আমাদের ৪র্থ গ্রেড দেওয়া হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু সে দাবি অগ্রাহ্য করার প্রেক্ষিতেই আজকের এ আন্দোলন। একটি দাবি আদায়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কিছু না কিছু সমস্যা হয়ই। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের নৈতিক দাবি সমূহ মেনে নিবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031189918518066