জামালপুরের ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা চলছিল রোববার (১৫ অক্টোবর)। বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখার মোট ১৬২ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে স্কুল প্রাঙ্গণের বাইরে আওয়ামী লীগ নেতার সমাবেশ কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া জটলা ও হট্টগোলের কারণে তারা ভোগান্তির শিকার হয়েছে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটেছে তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিন দুপুরে বিদ্যালয়ে মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশী এসএম শাহীনুজ্জামান শাহীন একটি সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। এর ঠিক আগেই বিদ্যালয়ে চলছিল দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা। আয়োজকরা জানান, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সমাবেশ শুরু করা হয়। কিন্তু সমাবেশ কেন্দ্র করে আগে থেকেই নেতাকর্মীরা ওই এলাকায় জড়ো হন। এ কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠ সমাবেশের জন্য প্রস্তুত। সারি সারি লাল ও সবুজ রঙের চেয়ার বসানো হয়েছে। অবশ্য কয়েকদিন আগে থেকেই সমাবেশের জন্য এ মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছিল। তবে পরীক্ষার সময় লোকজন যাতে বিদ্যালয় মাঠে ঢুকে জটলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রবেশপথে ডজন খানেক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বলেন, সমাবেশে আগত লোকজনের বেশিরভাগ দুপুরের আগেই বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেয়। বিদ্যালয়টি সড়কের পাশে হওয়ায় সমাবেশে আগত লোকজনের হট্টগোল ও তাদের যানবাহনের শব্দে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশী এসএম শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সমাবেশ শুরু করা হয়েছে। সমাবেশের কারণে পরীক্ষা দিতে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হয়নি।
ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দুপুর ১টায় পরীক্ষা শেষ হয়। পরীক্ষা চলাকালে লোকজন যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত গেটে পুলিশ অবস্থান করে। ফলে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পেরেছে।
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন তালুকদার বলেন, বিদ্যালয় মাঠে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। একইদিন ওই বিদ্যালয়ে পরীক্ষাও ছিল। শিক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে, সেজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের অবগত করেন। সমাবেশে আগত জনগণ যাতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিঘ্ন না ঘটায় সেজন্য বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়টি আগে থেকেই জানতাম। সে কারণেই পরীক্ষা শেষে সমাবেশ করার শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়। ওই সমাবেশের আয়োজকরা নিয়ম মেনেই সমাবেশ শুরু করেছে। এতে পরীক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।