বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান পলাতক হওয়ায় তাদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে আইনি লড়াই করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোর্টে হাজির না হয়ে আইনি লড়াই করার কোনো নজির নেই। রিট বা রিভিশন বা বাতিল আবেদন—যে কেনোভাবে আসতে প্রথমেই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আত্মসমর্পণ না করে কোনোভাবেই আসতে পারেন না। পলাতক থাকলে কোনো ব্যক্তি আইনি কার্যধারায় অংশ নেওয়ার অধিকারী হবেন না।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, করোনাকালে দুজন দেশের বাইরে থেকে আগাম জামিন চেয়েছিলেন। তখন আদালত কী করেছিলেন? আদালত সে দুজনের আবেদন শুধু খারিজই করেননি, তাদের জরিমানাও
করেছিলেন।… সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ে বিভিন্ন সময়ে এটা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে, পলাতক ব্যক্তির আইনের আশ্রয় লাভের কোনো সুযোগ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রচলনের দিন থেকে আজ পর্যন্ত কোনো মামলায় কোনো লোক আদালতে হাজির না হয়ে কোনো ধরনের সাবমিশন রাখতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান—এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ওনারা (তারেক-জুবাইদা) আদালতে আসেননি।
অতএব কোনো ধরনের সাবমিশন রাখার সুযোগ পাবেন না।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলাটি করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ২৯ মার্চ এ মামলায় পলাতক তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আবেদন করেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। দুজনের পক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শুনানিতে অংশ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এ আইনজীবী।
তবে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তাদের আইনের আশ্রয় নিতে কে নিষেধ করেছে? তিনি (তারেক রহমান) থাকবেন লন্ডনে রাজকীয় ভবনে, আর বলবেন তাকে আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত (অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলে) থাকার পরও তারা আইনজীবী নিয়োগের আবেদন আদালতের সময় নষ্ট ও আদালত অবমাননার সমান।
দুদকের এ আইনজীবী আরও বলেন, এর আগে আপিল বিভাগ তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের আবেদন খারিজ করে বিচারিক আদালতে আশ্রয় লাভের নির্দেশ দেন। তারা তা করেননি। নতুন একটা আবেদন নিয়ে এসেছেন। তাই তাদের আবেদন খারিজ করে অভিযোগ শুনানি শুরু করার প্রার্থনা করেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান শুনানি নিয়ে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের পক্ষে আইনজীবী থাকবে কি না, এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।