পাঠ্যবই সংশোধন নিয়ে তালগোল পাকিয়ে গেছে। নানামুখী চাপে গত জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অসঙ্গতি, ভুল ও ত্রæটি চিহ্নিত করে সুপারিশ দেয়ার জন্য গত ৩১ জানুয়ারি ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। পরবর্তী এক মাসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হলেও মাসপূর্তির পাঁচ দিন আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই কমিটিই পাল্টে দিয়ে নতুন আরেকটি ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে পাঠ্যবই সংশোধনীসংক্রান্ত কমিটি আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময় পেয়েছে। কিন্তু সেই সময় ফুরাতে আর দিন সাতেক বাকি আছে। এখনো সংশোধনী কী হবে তা ঠিক করা যায়নি। এর ফলে সহসা পাঠ্যবইয়ের চূড়ান্ত গতিপ্রকৃতি যেমন জানা যাবে না তেমনি সংশোধনের নামে বছরের অর্ধেক সময় চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কী পড়বে- সে প্রশ্নের জবাব আপাতত মিলছে না। পাশাপাশি পাঠ্যবই সংশোধনী কমিটি কাজের সম্মানি হিসেবে সরকারের কাছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছে। এই টাকা দেয়া হবে কিনা এ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষা প্রশাসন। সবমিলিয়ে পাঠ্যবই নিয়ে তামাশার সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (১৯ মার্চ) ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য ।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এনসিটিবি থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের অন্তত ৫০ জন লেখককে বাদ দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নতুন কমিটি থেকে আগের কমিটির সদস্য সচিবসহ দুজন বাদ পড়েছেন। উল্টো দিকে এমন তিনজনকে কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে যাদের পাঠ্যবই নিয়ে জানা-বোঝার ঘাটতি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। অর্থাৎ যা বলে দেয়া হবে তাই কমিটির প্রতিবেদনে যুক্ত করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি শুধু কমিটি পরিবর্তন করেই মন্ত্রণালয় ক্ষান্ত দেয়নি, কমিটির কার্যক্রমেও আনা
হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। প্রথম গঠিত কমিটিতে বলা হয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অসঙ্গতি, ভুল ও ত্রæটি চিহ্নিত করে সুপারিশ দেবে। কিন্তু পরের কমিটিকে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য ‘বিজ্ঞান’ বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যেসব মন্তব্য, আপত্তি পর্যবেক্ষণ পাওয়া গেছে সেগুলো আমলে নিয়ে ফের পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কমিটি গঠন করে একমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হলেও মাসপূর্তির পাঁচ দিন আগে ওই কমিটি বদলে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করার কারণে পুরো বিষয়টিই অনিশ্চয়তার পড়ে গেছে। এর ফলে পাঠ্যবই সংশোধন নিয়ে শিক্ষা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে প্রথমবার গঠিত কমিটির
কর্মপরিকল্পনায় বলা ছিল ষষ্ঠ ও সপ্তমের সবকটি পাঠ্যবই সংশোধন। কিন্তু আগের কমিটি বাদ দিয়ে গঠিত দ্বিতীয় কমিটির কর্মপরিকল্পনা নির্ধারিত তিনটি বই সংশোধনীর কথা বলা হয়েছে। এর ফলে কতটুকু আন্তরিকতার সঙ্গে এগুলো সংশোধন হবে তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান বলেন, হয়তো প্রয়োজনের কারণেই পাঠ্যবই সংশোধনসংক্রান্ত কমিটি পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু কী সেই প্রয়োজন তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আপনি এই বিষয়ে যা যা জানতে চান তা জানিয়ে লিখিত প্রশ্নমালা দিতে হবে। তারপর শাখা থেকে জবাব এনে আপনাকে জানানো হবে। কারণ পাঠ্যবই নিয়ে মন্ত্রী প্রতিদিন কথা বলছেন। এখন আমিও যদি বলি তাহলে আমার এবং মন্ত্রীর দুরকম কথা বেরোবে। এতে সমস্যা হবে। কাজেই লিখিত থাকলে সমস্যা নেই।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সংক্রান্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, পাঠ্যবই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রতিদিন কথা বলা সচিব সোলেমান খান পছন্দ করছেন না। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, পাঠ্যবই নিয়ে এখন একটি সংকট চলছে। সংকট নিরসনে আমাদের কাজ করা দরকার। কথা বলাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের পাঠ্যবইয়ে লেখক তালিকা যাচাই করেছে এনসিটিবি। এতে অনেকের বিষয়ে আপত্তি উঠেছে। এজন্য এনসিটিবি থেকে অন্তত ৫০ জন লেখকের তালিকা পাঠিয়ে বলা হয়েছে, পাঠ্যবই রচনার কাজ থেকে এদের বাদ দিতে হবে। মাসখানেক আগে এই চিঠি পাঠালেও মন্ত্রণালয় এখনো কিছু জানায়নি।
কমিটিতে পরিবর্তন : গত জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পরই পাঠ্যপুস্তকের ভুল ও অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। এই বিতর্কের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অসঙ্গতি ও ভুল-ত্রæটি চিহ্নিত করে সুপারিশ দেয়ার জন্য গত ৩১ জানুয়ারি ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. আজিজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- আইইআরের অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান, এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো. লুৎফর রহমান, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের একজন উপসচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশেনের পরিচালকের একজন প্রতিনিধি, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন্নাহার শাহীন। এই কমিটি কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ কমিটি পাল্টে ফেলা হয়। ৮ সদস্যের নতুন কমিটিতে আহ্বায়ক ঠিক থাকলেও বদলে যান সদস্য সচিব এবং আইইআরের একজন অধ্যাপক। নতুন কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. মোনালিসা খানকে সদস্য সচিব করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই মোনালিসা খান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ঘনিষ্ঠ। এছাড়া কমিটিতে যুক্ত হয়েছেন- এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মো. লুৎফর রহমান, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের উপসচিব এসএম বশীর উল্লাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (প্রকাশনা) ড. মুহাম্মদ আবদুস সালাম, ঢাকার তেজগাঁওয়ের মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুজির উদ্দিন, দিনাজপুরের ভবানীপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হাসান মাসুদ এবং মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন্নাহার শাহীন।
অভিযোগ রয়েছে, পাঠ্যবই সংশোধনীর নামে গঠিত কমিটির কাছ থেকে বিব্রতকর কোনো প্রতিবেদন যাতে না আসে সেজন্য অনেক ভাবনাচিন্তা করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের কমিটিতে স্থান পাওয়া সদস্য সচিবের মতিগতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া আইইআরের অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানকে বাদ দেয়ার কারণ হচ্ছে- তিনি স্পষ্টবাদী। চাপিয়ে দেয়া কোনো প্রতিবেদন তৈরির জন্য তিনি কমিটিতে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, তিনি নিজেই পাঠ্যবই মূল্যায়ন করছেন। তারমতে, পুরো বিষয়টি নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার চর্চা দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত না নিয়েই এনজিওদের পরামর্শ নিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে গোড়ায় গলদ রয়েছে। সঙ্গতকারণেই আমি ওই কমিটিতে থাকিনি।
কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিম বলেন, শুধু কমিটিই পরিবর্তন হয়নি, কমিটির কাজের পরিধিও পরিবর্তন হয়েছে। এমনকী নতুন কমিটিতে যারা আসছেন তারা পাঠ্যপুস্তক কতটুকু বোঝেন সে নিয়েও তার প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া আগে বলা ছিল ষষ্ঠ ও সপ্তমের সব বই মূল্যায়নের কথা। নতুন কমিটিতে বলা হয়েছে, শুধু ষষ্ঠ ও সপ্তমের তিন-চারটি বই সংশোধন করে দিতে। কীভাবে তিনি কাজ করবেন তা না জানালেও কাজটি করতে কমিটির সদস্যরা সরকারের কাছে কিছু সম্মানি চেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। এরপরই তিনি এই কাজের জন্য কিছু সম্মানি চেয়ে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু সেটির এখনো সুরাহা হয়নি। তবে ঠারেঠুরে তিনি এও বুঝিয়েছেন, নতুন শিক্ষাক্রমটি তার পছন্দ হয়নি। কেন, কী কারণে পছন্দ হয়নি তা অবশ্য তিনি জানাননি।
পাঠ্যবই সংশোধনী নিয়ে কর্মশালা মার্চের শেষ সপ্তাহে : নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই বদলে গেছে। ইতোমধ্যে চালু হওয়া তিন শ্রেণির বইয়ে ব্যাপক পরিবর্তনও এসেছে। কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পরই পাঠ্যপুস্তকের ভুল ও অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়। এই বিতর্কের মুখে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য প্রণীত ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহার করে নেয় এনসিটিবি। নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ওই দুটি বইয়ের নাম একই। এনসিটিবি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়েরও কিছু অধ্যায় সংশোধন করা হবে। তিনটি বইয়ের সংশোধনী ‘শিগগিরই’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জানানো হবে। কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তি জারির এক মাসের বেশি সময় পার হলেও সংশোধনী দিতে পারেনি এনসিটিবি। উল্টো কমিটিই পরিবর্তন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, তিনটি বইয়ের সংশোধনীর কাজ চলছে। যাচাই-বাছাইয়ের (ট্রাই আউট) জন্য গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সারাদেশের প্রায় ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির কর্মকর্তারা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এরপর ২০, ২১ ও ২২ মার্চ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এ নিয়ে কর্মশালা ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া হবে। সবকটির ভিত্তিতে ২৭ থেকে ৩১ মার্চ পরিমার্জনের কাজ করা হবে। তারপর সংশোধনী পাঠানো হবে।
এনসিটিবির সূত্র বলছে, সংশোধনীর পরিমাণ বেশি হলে অংশবিশেষ (ডিউ পার্ট) ছাপিয়ে দেয়া হবে। আর সংশোধনীর পরিমাণ কম হলে ওয়েবসাইটে সংশোধনী দেয়া হবে। একই সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তা বিদ্যালয়গুলোতে পড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিন মাসেও সংশোধনী দিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্যার কথা জানালে এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, সাধারণত যেসব অধ্যায় সংশোধন হচ্ছে, সেগুলো পাঠ্যসূচি অনুযায়ী এখনো পড়ানোর সময় হয়নি। এছাড়া পবিত্র রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটিও আছে। ফলে সমস্যা হবে বলে তাদের মনে হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, শিক্ষা প্রশাসনের একটি অংশ এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বড় একটি অংশ চাইছেন, আধাআধি প্রস্তুতিতে চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন চাইছেন না। ২০২৩ পুরো বছরটিই নতুন শিক্ষাক্রমে আরো বেশি করে পাইলটিং হোক। তাতে ভুল-ত্রæটিগুলো অনয়াসে বের হয়ে আসবে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি চাইছেন, শিক্ষাক্রম চলুক। ভুল হলেও তিনি চান, এই আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি। বাংলাদেশকে অবশ্যই এই পদ্ধতির সঙ্গে মিশে যেতে হবে। শুরুতে একটু ভুল থাকলে পরে তা ঠিক হয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সংশোধনী কী হবে, সেটা বের করতেই বছরের চার মাস চলে যাবে। তারপর কোন অংশ যুক্ত হবে আর কোন অংশ বাদ যাবে- তা ঠিক করতে আরো মাস দুয়েক যাবে। সবমিলিয়ে সংশোধনীর নামে বছরের ৬ মাস চলে যাবে। জুন মাসের পর থেকেই শুরু হবে নির্বাচনী ডামাডোল। শিক্ষায় নজর কতটুকু আর থাকবে? সবমিলিয়ে করোনার পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ছিল; সেখানে আরো গভীর খাদে যাচ্ছে ‘শিক্ষা’। প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হবে। একইভাবে ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে তা বাস্তবায়ন হবে। এরপর উচ্চমাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ২০২৬ সালে এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।