পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ছাত্রাবাসে কাজ করার সময়ে নিচে পড়ে দুই নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন, প্রকল্পের সাইট ইঞ্জিনিয়ার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার চর বেলতৈল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. হোসাইন (২৪)।
ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, প্রকল্পের কাজে গাফিলতির অভিযোগে নিহত নির্মাণশ্রমিক তুহিন হোসেনের চাচা মফিজুর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হারুনুর রশিদ (৬৬), প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জি এম আজিজুর রহমান (৬০), ম্যানেজার নাছিরুল হক (৩৫) ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মিজানুর রহমান (৩৮), সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. হোসাইন (২৪) ও সুজাদৌল্লাহ (২৩)।
ওসি জানান, মামলার পর রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. হোসাইনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাকি আসামিদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের বাইরের অংশে শ্রমিকেরা দড়ি ঝুলিয়ে প্লাস্টারের কাজ করছিলেন। এ সময় আকস্মিকভাবে দড়ি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যান তিনজন নির্মাণশ্রমিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের স্থানীয়রা পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথে একজন মারা যান।
নিহতরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানপাড়া চর বাসুদেরপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে তুহিন হোসেন (২৫) ও রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিগ্রাম ঘণ্টি গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে আসাদুল আলী (৩৫)।
আহত ব্যক্তি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর অনুপনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নয়ন আলীর ছেলে রবিউল আওয়াল (৩০)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। প্রকল্পে তাদের নিরাপত্তা বজায় রেখে কাজ করতে বলা আছে। তার পরও কীভাবে ঘটনাটি ঘটল আমরা তদন্ত করে দেখব।’