এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একে একে ৪০টির বেশি পাহাড় সাবাড় করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আকবর শাহ এলাকার বেশ কয়েকটি পাহাড় দখল করে নিয়েছেন। তিনি হলেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম। এখন উত্তর পাহাড়তলীর ৯ নম্বর ওয়ার্ড রসুলপুর বেলতলিঘোনা এলাকায় নিজের বাবার নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও করেছেন তিনি। স্কুলটির ঠিক দু শ গজ দূরে পাহাড়ের ঢালুতে সম্প্রতি ঝুলিয়েছেন আরেকটি সাইনবোর্ড। সেখানেও লেখা নিজের বাবার নাম। জসিমের এমন আয়োজন আবারও পাহাড় দখলের পাঁয়তারা বলেই মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলর জসিম একের পর এক পাহাড় কাটছেন। হচ্ছেন মামলার আসামিও। আদালত থেকে জামিন নিয়ে ফের পাহাড় কাটায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। স্থানীয় বেলতলিঘোনা সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি সফিকুল ইসলাম মানিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, জসিম তাঁর বাবার নামে স্কুল দিয়েছেন আসলে পাহাড় কাটার জন্যই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাহাড় কাটার ঘটনায় কাউন্সিলর জসিম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে এ পর্যন্ত চারটি মামলা করা হয়েছে। সর্বশেষ মামলাটি করা হয় ১১ এপ্রিল। নগরের আকবর শাহ থানার বেলতলিঘোনা এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ৭ এপ্রিল পাহাড় কাটার সময় ধসে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় জসিমসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন চসিকের রাস্তা নির্মাণের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, একই প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, চসিকের
সিনিয়র সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ওয়ালী আহমেদ, ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি-হক ব্রাদার্সের ওমর ফারুক ও তাকিয়া বেগম, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম এবং তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ ইসমাইল।
এদিকে পাহাড় কেটে স্কুল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও অন্যদের বিরুদ্ধে শুধু পাহাড় কাটা নিয়েই তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের মামলাও রয়েছে। চারটি মামলার বাদীই পরিবেশ অধিদপ্তর।