সমাজে পিছিয়ে থাকাদের দেখলেই তাদের এগিয়ে এনে শিক্ষা ও জীবিকার ব্যবস্থা নিশ্চিতে সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি অন্তত এটুকু বলতে পারি যে, যারা পিছিয়ে আছে তাদের দেখতে পেলে আমি তাদের এগিয়ে আনবো। তাদের জন্য শিক্ষা, চাকরি, জীবিকা ও অন্যান্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো।’
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এসময় তিনি দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তুলছে, যেখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। এটা আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। আমরা এটি নির্মাণ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একক ধর্মের মানুষ নেই। সব ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করছে। আমরা সব ধর্মীয় বিশ্বাসের কল্যাণের জন্য কাজ করি। আমি আপনাদের (খ্রিস্টান সম্প্রদায়) সবাইকে বলছি, আমরা এ বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশের চেতনায় গড়ে তুলছি, যেখানে সব মানুষের সমান অধিকার রয়েছে।’
যিশু খ্রিস্ট মানবকল্যাণ ও মানবধর্ম অনুসরণের শিক্ষা দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন, যা আপনি তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়া চিন-এর মাধ্যমে দেখতে পাবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো সমস্যা দেখা দিলেই সরকার সবসময় সবার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি যে, দেশের সব মানুষের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জন্য তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা সংবিধানে তাদের (তৃতীয় লিঙ্গ) অধিকার সুরক্ষিত করেছি। শুধু তাই নয়, ইসলাম ধর্ম তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জীবনধারা পুরুষ নারীর মতো অধিকারও নিশ্চিত করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন চাকরি, সব ধরনের পরিচয়পত্র বা পরিচয়পত্রের মতো সব ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদের জীবনযাত্রার মান ও জীবিকা উন্নত করতে তাদের বাড়িও দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি নটর ডেম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। কারণ এটি একটি স্বনামধন্য কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। এখন এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। আমরা সব প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং আমরা এটা করি যাতে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার পায়।’
মসজিদভিত্তিক শিক্ষার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখন মসজিদভিত্তিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে, তখন হিন্দুদের মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে একইভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করে এবং করে চলেছে। আমি চাই, আপনারা সবাই নিজ নিজ অধিকার নিয়ে এদেশে বসবাস করুন। বঙ্গবন্ধু এ দেশকে স্বাধীন করেছেন এবং এর সুফল সব মানুষ ভোগ করবে।’