মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী পিটি করার সময় অতিরিক্তি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রোববার (৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থদের মধ্যে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া আক্তার, নুসরাত, আয়শা, নাফিজা, সাদিয়া, কবিতা, মনিকা,৬ষ্ঠ শ্রেণির হাফছা, ফাতেমাসহ মোট ১৩ শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। তারা চিকিৎসা নিয়ে পড়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এতো গরমে স্বাভাবিকভাবে মানুষ যেখানে টিকতে পারছে না সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পিটি করোনোর কী প্রয়োজন ছিল।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিন উদ্দিন বলছেন ভিন্ন কথা । তিনি বলেন, গরমে আমাদের স্কুলে প্রতিটি ক্লাসেই শ্রেণি শিক্ষক দিয়ে পিটি করানো হয়। কিন্তু রোববার সিরাজদিখান থানা পুলিশের একজন অফিসার শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাহিরে নিয়ে ইভটিজিং ও মাদকবিরোধী কথা বলার জন্য গেলে কিছু শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অসুস্থ শিক্ষার্থী নাফিজা আক্তারের বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমরা নিজেরাই গরমে ঘরে থাকতে পারি না অথচ সমাবেশ করার জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে নিয়েছে।
সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসুস্থতার ঘটনা আমাকে জানিয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি ছিল।
মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত বলেন, ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিদিন পিটি হয় । আজ পিটি চলাকালে আমাদের কাজের অংশ হিসেবে সিরাজদিখান থানার এএসআই কামরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, মোবাইল ব্যবহারে সতর্কতা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতার বিষয়ে ৪ থেকে ৫ মিনিট অলোচনা করেন । এ সময় কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জৈনসার ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু বলেন, সিরাজদিখান থানার কামরুল ইসলাম নামে একজন অফিসার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সচেতনতামূলক কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করে ছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আঞ্জুমান আরা বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা নিয়ে বিকেলের মধ্যে সবাই বাড়ি ফিরে গেছে। এই ছাত্র-ছাত্রীদের যারা চিকিৎসা দিয়েছেন সেই ডাক্তাররা বলেছেন- প্রচণ্ড গরমের কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।