দৈনিক শিক্ষাডটকম লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুসরাত জামানের নির্দেশে এজলাসের ভেতর কাঠগড়ায় আবদুল্লাহ আল মামুন নামের এক পুলিশ সদস্য আসামিকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিচারকের নির্দেশে এক কনস্টেবল তাকে দুইটি থাপ্পড় দেন। গতকাল মঙ্গলবারের এ ঘটনায় আইনজীবীরা আদালত বর্জন করেন। এসময় ওই বিচারককে লক্ষ্মীপুর থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানান আইনজীবীরা।
বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মুকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জামান মামলার শুনানির পর মামুন নামের এক আসামিকে এজলাসে ডেকে নেন। পরে পুলিশের এক কনস্টেবলকে ওই আসামিকে দুটি থাপ্পড় দিতে বলেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে কনস্টেবল আসামিকে থাপ্পড় দেন। আসামি মামুনও পুলিশের একজন সদস্য। এ ঘটনায় একটি প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এজলাসে থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার আইনগত প্রতিকার চেয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ আল মামুন। একইসঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
আসামি মামুন চট্টগ্রামরে মিরসরাই থানার মোবারকঘোনা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। তিনি পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জে কর্মরত।
অভিযোগে আবদুল্লাহ আল মামুন উল্লেখ করেন, স্ত্রী সুমাইয়া সুলতানা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লক্ষ্মীপুর সদর আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আদালতে বিচারাধীন। মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। বাদীপক্ষ দুই সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষীর জেরা শেষে মামুন এজলাস থেকে বের হয়ে বারান্দায় যান। এসময় তাকে বাদী ও তার মা পারুল বেগম মারধর করেন। বিষয়টি তিনি আদালতের বিচারক নুসরাত জামানকে জানান। কিন্তু বিচারক একতরফাভাবে কথা না শুনে তাকে এজলাসের কাঠগড়ায় ডেকে নেন। পরে বিচারক পুলিশ কনস্টেবল কবিরকে নির্দেশ দেন তাকে দুটি চড় দেওয়ার জন্য। বিচারকের নির্দেশে বিচারপ্রার্থী জনগণের সামনেই কনস্টেবল কবির তাকে দুটি চড় দেন। এসময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। বিচারক তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে চড় দিয়েছি, এখন আমি নিজে তোকে চড় মারবো’। পরে আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিলে আসামি মামুনকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আইনজীবী আবদুর রহিম রাজু বলেন, আদালতের এজলাসে ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জামান কনস্টেবলকে দিয়ে আসামিকে থাপ্পড় দিয়েছেন। এটি আইনবহির্ভূত ঘটনা। এ ঘটনায় আইনজীবী সমিতি সাধারণ সভা করেছে। বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সঙ্গে সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বসবেন। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নুসরাত জামানের আদালতে কোনো আইনজীবী যাবেন না। তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
লক্ষ্মীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমরান হোসেন ফয়সাল বলেন, লিখিত অভিযোগের ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি বাইরে আছি। এ বিষয়ে এখন বিস্তারিত বলতে পারবো না।