ময়মনসিংহে পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেন (২৭) খুনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করেছে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পৃথক পৃথক অভিযানে নিহতের সহোদর ভাই ও তার বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার ভোর রাতে ঢাকা ও মুক্তাগাছা উপজেলায় পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ভাই হাবিবুল করিম তপু (৩৫) ও তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন (৩৪)। এর মধ্যে তপু খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী পদে কর্মরত বলে জানা যায়।
সোমবার দুপুরে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. কামাল আকন্দ বলেন, মূলত পারিবারিক কলহের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে সহোদর ভাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
তিনি আরও বলেন, সদর উপজেলার বাঘেরকান্দা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল কবিম ওরফে আবুলের ছেলে পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেন সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলো। সম্প্রতি সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বাড়িতে বসবাস করছিলো। এসব কারণে পুলিশ বিভাগ থেকে বেশ কয়েকটি লঘু এবং গুরুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলো সাদ্দাম হোসেন। গত কিছুদিন ধরে সে মাদক সেবনের টাকার জন্য পরিবারের সদস্যদের অত্যাচার করার পাশাপাশি বাবা-মাকে কয়েক দফা লাঞ্ছিতও করে। সেই সঙ্গে সে একটি মোটরসাইকেলও বন্ধক দিয়েছে। ইদানিং তার বাবা পরিবারের প্রয়োজনে একটি জমি বিক্রি করলে ওই টাকা দেয়ার জন্য সাদ্দাম হোসেন তার বাবাকে চাপ সৃষ্টি করছিলো। এসব ঘটনায় পরিবারে ব্যাপক অশান্তি সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে সাদ্দামের ভাই হাবিবুল করিম তপু। ঘটনার দিন শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বন্ধু আনোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে ডেকে স্থানীয় একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সেখানে বসে তপু তার ভাই সাদ্দাম হোসেনকে চাকরি ফিরে যেতে অনুরোধ করে মাদক থেকে সরে আসার অনুরোধ জানায়। কিন্তু ভাইয়ের এসব কথায় সাদ্দাম হোসেন পাত্তা না দেয়ায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গলায় রশি লাগিয়ে গাছের সঙ্গে আটকে শ্বাসরোধ করে সাদ্দাম হোসেনকে হত্যা করা হয়। এই কাজে তপুকে সহযোগীতা করে তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি শাহ কামাল আকন্দ।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সদর উপজেলার বাঘেরকান্দা গ্রামের নিজকল্পা এলাকার একটি মেহগনি গাছের বাগানে পাতা কুড়াতে গিয়ে পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এক নারী।