সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সই করা নোটিশটি ই-মেইল ও স্থানীয় ঠিকানায় পাঠানো হয়। এর আগে গত রোববার একই অভিযোগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে চবি শিক্ষক সমিতি।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মাইদুল ইসলাম। তিনি সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি গবেষণা ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ। তিনি বলেন, ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ায় সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, আপনি মো. মাইদুল ইসলাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধান পরিপন্থী। এ ব্যাপারে আপনার বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না; তা আগামী ১৫ (পনেরো) কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য আদেশক্রমে আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মো. মাইদুল ইসলামকে হোয়াটস অ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুলাই মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা। ওই বছরের ৬ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে তিনি আগাম জামিন নেন। হাইকোর্টের দেওয়া আট সপ্তাহের জামিন শেষে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন মাইদুল ইসলাম। আদালত তা নাকচ করে দিয়ে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাইদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর ৯ অক্টোবর উচ্চ আদালত শিক্ষক মাইদুলকে ছয় মাসের জামিন দেন এবং উচ্চ আদালতে মামলাটি স্থগিত করা হয়।