টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার মির্জাপুর হাতেম আলী বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তালুকদারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক রিয়াজুল জান্নাত মিথুনের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক তাকে ল্যাবসহকারী পদে নিয়োগের জন্য ১৫ লাখ টাকা নিলেও তিনি নিয়োগ পাননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে তিনি ছয় লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এখন ঘুষের বাকি ৯ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রোববার টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে প্রতিষ্ঠানের খণ্ডকালীন শিক্ষক রিয়াজুল জান্নাত মিথুন সংবাদ সম্মেলন করে ঘুষ বাবদ দেয়া টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও ডিজির প্রতিনিধির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী রিয়াজুল জান্নাত মিথুন গোপালপুর উপজেলার সুতী দিঘুলীপাড়া গ্রামের মিনহাজ উদ্দিনের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ তিনি ওই বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। চলতি বছরের ১৭ মার্চ ওই বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তালুকদারের আশ্বাসে মিথুন ল্যাব সহকারী পদে আবেদন করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তালুকদার নিয়োগ নিশ্চিত করতে তার কাছে ছয় লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আরো নয় লাখ টাকা নেন প্রধান শিক্ষক।
তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে কয়েক দফায় ১৫ লাখ টাকা নেয়া হলেও আমাকে চাকরি দেয়া হয়নি। চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তালুকদার আমাকে ছয় লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা চাওয়ায় তিনি নানাভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। আমি অবশিষ্ট নয় লাখ টাকা ফেরতসহ প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মিথুন আরো বলেন, গত ৩ জুন নিয়োগ পরীক্ষা থাকলেও প্রধান শিক্ষক আগের রাতে প্রশ্নপত্র তার পছন্দের প্রার্থীদের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধান শিক্ষক চারটি ভিন্ন পদের জন্য ৮-৯ জনের কাছ থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে বিষয়টি ডিজির প্রতিনিধিকে অবগত করলে পরীক্ষাটি ডিজির প্রতিনিধি স্থগিত করেন।
চাইলে নিয়োগ পরীক্ষার ডিজির প্রতিনিধি টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কানিজ সালমা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল তালুকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গোপালপুরের উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনিন সুলতানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, নিয়োগ হয়েছে ও স্থগিত হয়েছে দুটোই আমি মৌখিকভাবে জানি। লিখিতভাবে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।