টাঙ্গাইলের বাসাইলে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল রোববার বাসাইল উপজেলার লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে এ কর্মসূচি পালন করে।
এলাকাবাসী জানায়, বখাটেদের কারণে বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়ে পাঠাতে পারেন না তারা। প্রতিনিয়ত মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে।
অভিভাবকদের জানিয়েও কোনো লাভ হয় না। প্রধান শিক্ষক প্রশাসনকে না জানিয়ে উল্টো ছাত্রীদের দোষারোপ করেন। অপমান সহ্য করতে না পেরেই এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান তারা। পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধু দ্রুত বখাটে বাঁধন ও প্রধান শিক্ষকসহ আসামিদের গ্রেফতার করতে হবে। দ্রুত গ্রেফতার না করলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। তাদের দাবি, আলীফা আক্তার জুঁইয়ের মতো আর কোনো শিক্ষার্থীর যেন এমন মৃত্যু না হয়। বখাটেরা যেন শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট করতে না পারে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, হাবলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজম, লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সুলতান, খন্দকার রিন্টু, বাবুল দেওয়ান, সাব্বির মিয়া, মুশফিকুর রহমান নয়ন সিকদার, আব্দুল আউয়াল খলিফাসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বাসাইল লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন উত্ত্যক্ত করেছে বাঁধন ওরফে পিচ্চি বাঁধন নামে এক যুবক। সম্প্রতি উত্ত্যক্তের মাত্রা বেড়ে যায়। মাঝে মধ্যে এসিড দিয়ে ছাত্রীর মুখ জলসে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার অভিযুক্ত বাঁধনসহ তার পরিবার এবং ভুক্তভোগী ছাত্রীসহ তার পরিবারকে ডেকে নেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেখানে বখাটে বাঁধনকে শাসিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছাত্রীর ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে তাকে বকাঝকা করা হয়। এতে অপমান বোধ করে ছাত্রী। এরপর বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পাশেই একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিলু ‘আমি দোষী নই’।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে গত বৃহম্পতিবার রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন ছাত্রীর দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম। আসামিরা হলেন, বখাটে বাঁধন ওরফে পিচ্চি বাঁধন, লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরজু জমাদার, সহকারী শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও সহকারী শিক্ষক তাছলিমা খাতুন ছবি।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।