দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়ারি ইউনিয়নের শালগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাঁচ বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। পাঁচটি পদ থাকলেও সহকারী শিক্ষক রয়েছেন চার জন। তাদের মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষকেকে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে তাকে প্রশাসনিক কাজেই বেশি সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। মাঝেমধ্যে তাকে বিদ্যালয় থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে শিক্ষা কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজে যেতে হয়। অংশ নিতে হয় প্রশিক্ষণ ও ক্লাস্টারসহ বিভিন্ন সভা-সেমিনারে। তখন তিনি ক্লাস নিতে পারেন না। অন্য দুই জন সহকারী শিক্ষককে সামলাতে হয় শিক্ষার্থীদের পুরো বিষয়। এতে পাঠদানসহ শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
একই চিত্র উপজেলার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকা ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এসব বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৩ সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের পদগুলো ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ ভাগ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণের বিধান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আবার সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়াও বন্ধ রয়েছে। তাই প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত শিক্ষকসংকট দূর করা প্রয়োজন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ হাছিনা ভূঁইয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি ও নিয়োগ বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষক পদে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠদান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পদোন্নতি ও নিয়োগসংক্রান্ত সব জটিলতার অবসান হওয়া প্রয়োজন।