দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরিশাল : প্রধান শিক্ষিকাকে অপসারণের দাবিতে বরিশাল নগরীর ৪নং ওয়ার্ডে ৮৩নং মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটে তালা দিয়েছেন অভিভাবকরা। প্রধান শিক্ষিকা মাহামুদা খানমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ তুলেছে তারা।
মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে এর সামনে আন্দোলন করেন অভিভাবকরা। স্কুলের গেটে তালা থাকায় সহকারী শিক্ষিকরা ক্লাসে ঢুকতে পারেননি।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাঠে ফুটবল খেলার সময় প্রধান শিক্ষিকার মেয়ের গায়ে আঘাত লাগায় প্রধান শিক্ষিকা এক ছাত্রকে ডেকে নিয়ে মারধর করে এবং তার মেয়ের পা ধরিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। প্রধান শিক্ষিকার মেয়ে একই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষকের একক সিদ্ধান্ত ও নিজের ইচ্ছেমতো স্কুলের নিয়মনীতি চালু করায় নানা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আর এসব বিষয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীসহ অবিভাবকসহ এলাকাবাসী।
ক্ষমা চাওয়ানো শিক্ষার্থীর অভিাবকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করে। প্রধান শিক্ষিকা আমাদের সন্তানকে মারধর করে।
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে প্রধান শিক্ষিকাকে বলেছি উপবৃত্তির কথা, তা না দিয়ে আমাকে অপমান করে তার কক্ষ থেকে বের করে দেয়।
বিদ্যালয়টিতে ১১ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অভিভাবকরা। অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানমকে দ্রুত শাস্তি ও বদলীর দাবি জানান।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সাইদুল হক পলাশ দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন শিক্ষার্থীদের মারধর করা নিয়মিত আচরণ প্রধান শিক্ষিকার। ওই কারণেই অভিভাবকরা এ কর্মসূচি করলো। আমি শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো ফল নেই। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ অনেক বার আসে অভিভাবকদের কিন্তু আমি নিরূপায়। গত সাড়ে ৩ বছরে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পনেরটির বেশি অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। সে তার ইচ্ছেমত বিদ্যালেয়ে যাওয়া আসা করে।
বরিশাল সদরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়সাল জামিল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন গিয়ে দেখি বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলানো, নির্বাচনের পরে এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। অভিভাবকরা আস্বস্ত হলে গেটের তালা খুলে দেয়।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষিকা মাহামুদা খানমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। একাধিক বার কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।