অবশেষে চূড়ান্ত হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা। এই বিধিমালার আলোকে নতুন করে সৃষ্টি করা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ। দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিগগিরই নিয়োগ দেয়া হবে সহকারী শিক্ষক। বর্তমানে যারা সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন কিংবা নতুন নিয়োগ পেয়েছেন বা পাবেন তাদের মধ্য থেকেই জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক পদেও পদোন্নতি পাবেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন এমন অনেক সহকারী শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অনেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করার পর দীর্ঘ ৩৮-৩৯ বছরেও কোনো পদোন্নতি পাননি। দেখা যায়, একজন সহকারী শিক্ষক ৩৮ বছর পরে একই পদে থেকেই তার চাকরি জীবন শেষ হয়। এটা দুঃখজনক। পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় অনেকে কাজের আগ্রহ হারান কিংবা পেশায় শতভাগ মনোযোগ দিতে চান না। পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হলে এই পেশার প্রতি মেধাবীদের আগ্রহও বাড়বে।
অবশ্য নতুন এই বিধিমালায় বলা হয়েছে প্রধান শিক্ষকদেরও পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হবে। পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) দু’টি পরিচালক পদেও ধাপে ধাপে পদোন্নতি পাবেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। সূত্র মতে, ২০২০ সালের গোড়ার দিকে প্রথমে এই বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হলেও পরবর্তীতে করোনা এবং তৎপরবর্তী কিছু জটিলতার কারণে সেই উদ্যোগের কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে এবার বিধিমালা চূড়ান্ত করে শিক্ষক নিয়োগের সব প্রক্রিয়া আরো সহজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিধিমালা তৈরির সব প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে। আশা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের দিকে এই বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা প্রকাশও করা হবে।
জানা যায়, আগামী মাসের শুরুর দিকেই চূড়ান্ত করা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা। এর অধীনে ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া অধিদফতরের দু’টি পরিচালক পদেও ধাপে ধাপে যেতে পারবেন প্রাইমারির শিক্ষকরা। মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জারি হবে প্রজ্ঞাপন।
সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আর সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে না। সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক করা হবে। আর এখন যারা প্রধান শিক্ষক আছেন তারাও পদোন্নতি পাবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক আগের একটি সিদ্ধান্ত ছিল যে, প্রধান শিক্ষকের পদ অবসরজনিত কারণে শূন্য হলে ওই পদে নতুন নিয়োগ না দিয়ে বরং সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা হবে। ২০২০ সালে সরকারি কর্মকমিশন থেকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের তালিকা করে একটি রিকুইজিশন দেয়ারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তখন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল প্রধান শিক্ষক পদে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। পদোন্নতি দিয়ে এই পদ পূরণ করা হবে। অন্যদিকে সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের ৬৫ শতাংশ পদ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং ৩৫ শতাংশ পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানিয়েছেন, শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা না থাকায় একটি স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল। এ অবস্থা কাটাতে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগে নতুন বিধিমালা তৈরির কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে বিধিমালা। এর ফলে ৬৫ হাজার শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাবেন। সুযোগ পাবেন অধিদফতরেও। আর এর মাধ্যমে নতুন করে মেধাবীরা এই পেশায় আসার আগ্রহ দেখাবেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।