এ দেশে সরকারের সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারা। একটি এলাকা বা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করেন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক। একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্থানীয় পর্যায়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য থাকে স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এসএমসি) এবং শিক্ষক ও অভিভাবক সমিতি (পিটিএ)। বিদ্যালয়ের কাজে একটি এলাকার প্রাথমিক শিক্ষকদের অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার শিশুদের ঝরে পড়া, দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, অল্প বয়সে কন্যাশিশুদের বিয়ে, অপুষ্টি ও অসুস্থতা, বাড়িতে লেখাপড়ায় অমনোযোগ ইত্যাদি।
বিদ্যালয়ে এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করেন শিক্ষক ও স্থানীয় বিদ্যোৎসাহী জনগণ। সমাজের স্থানীয় জনগণ এগিয়ে এলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন হয় ও কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।
ঠিকমতো পাঠদান হচ্ছে কিনা, সে ব্যাপারে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরও খোঁজ নিতে হবে। বিদ্যালয় পর্যায়ে আর্থিক বরাদ্দ, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে আর্থিক বরাদ্দসহ সরকারের দেওয়া অর্থ বিদ্যালয়ের কাজে সঠিকভাবে বাস্তবায়নে এসএমসি সভাপতি ও সদস্যদের তদারকি করতে হবে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বনভোজন, সামাজিক কাজেও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা থাকা দরকার। ভালো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পুরস্কৃত করা; দরিদ্র ও এতিম শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে যায়।
বিদ্যালয় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন মানেই সমাজের উন্নয়ন। একটি বিদ্যালয় থেকে শিশুরা শিক্ষিত ও সচেতন হবে। তারা বড় হয়ে সমাজে অনেক অবদান রাখবে। তাই বিদ্যালয়ের উন্নয়নে স্থানীয় জনগণ, অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদের উচিত স্থানীয় জনগণ ও অভিভাবকদের বিদ্যালয়ের কাজে সম্পৃক্ত করা; বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।
লেখক: ইনস্ট্রাক্টর (সাধারণ), পিটিআই, সোনাতলা, বগুড়া