প্রিন্স হ্যারির স্পেয়ার বইয়ের অর্ধেক বাদ গেছে পরিবারকে ‘বাঁচাতে’! - দৈনিকশিক্ষা

প্রিন্স হ্যারির স্পেয়ার বইয়ের অর্ধেক বাদ গেছে পরিবারকে ‘বাঁচাতে’!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রি ন্স হ্যারির স্মৃতিকথামূলক বই ‘স্পেয়ার’ যে ‘হট কেক’ হবে, তা আগেই অনুমান করা গিয়েছিল। গত ১০ জানুয়ারি বইটি বাজারে আসার আগেই বিশ্বব্যাপী বেশ হইচই ফেলে দিয়েছিল। বইটিতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বহু অজানা অধ্যায় তুলে ধরেছেন প্রিন্স হ্যারি। নিউইয়র্ক টাইমস ও ফোব্স জানাচ্ছে, নন-ফিকশন বইগুলোর মধ্যে অতি দ্রুততার সঙ্গে এই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কপি বিক্রির ক্ষেত্রে ‘স্পেয়ার’ সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙেছে। বইটি প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডাসহ সারা বিশ্বে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ কপি বিক্রি হয়ে যায়। ব্রিটেনে বইটি প্রথম প্রকাশ্যে আনে দেশটির প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এ নিয়ে প্রথম নিবন্ধেই প্রকাশ করা হয় হ্যারি-উইলিয়াম দুই ভাইয়ের মারামারির ঘটনা! ঘটনা অনুযায়ী, হ্যারিকে আঘাত করে নিচে ফেলে দেন ভাই উইলিয়াম। এ ঘটনা ছোটখাটো ছিল না মোটেই। কেননা, ছোটখাটো ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে দুই সহোদরের মারামারিতে!

বইটি প্রকাশের পর এর পক্ষে ও বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছেই। অনেকেই বলছেন, এটি একটি দারুণ বই, অকপট সাহস দেখিয়েছেন এই নিঃসঙ্গ যুবরাজ। কেউ কেউ এ গ্রন্থ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। যাঁরা বলেছেন, আশ্চর্য রকমের ভালো লেখা—তাঁরা একইসঙ্গে এই বইয়ের অভিভূতকর দিকগুলোও তুলে ধরেছেন। বইটির শুরুতে বর্ণিত একটি ঘটনা বলা যেতে পারে। ফ্রগমোরের রাজকীয় সমাধিক্ষেত্রে হ্যারি তাঁর বাবা এবং ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এখানে অনেক পূর্বপুরুষকে সমাহিত করা হয়েছে। হ্যারি লিখেছেন, যখন তাঁর বাবা এবং ভাই আসেন, তাঁরা কবরস্থানের ভেতর দিয়েই ঘুরে বেড়ায়। হ্যারি এক্ষেত্রে উদাহরণ টানেন শেক্সপিয়রের প্রিন্স হ্যামলেটের।

অনেক সমালোচক বলেন, ‘স্পেয়ার’ বইটি সম্ভবত নির্বোধ ও বিভ্রান্ত এক রাজপুত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্পেয়ার হ্যারির সরাসরি লিখিত নয়। এই আত্মজীবনীর ঘোস্ট-লেখক (এক্ষেত্রে ‘অনুলেখক’ বলা যেতে পারে) জে আর মোহরিঙ্গার। মোহরিঙ্গারের চিত্তাকর্ষক বর্ণনায় ৪১৬ পৃষ্ঠার বইটি অত্যন্ত গতিময় বলিয়ে জানিয়েছেন অনেক সমালোচক। মোহরিঙ্গার একজন সাবেক রিপোর্টার যিনি ফিচার লেখার জন্য পুলিত্জার পুরস্কারও জিতেছেন। এজন্য বলা হচ্ছে যে, স্পেয়ারের বিষয়বস্তু সম্পর্কে যা-ই বলা হোক—এটি সুলিখিত এবং আত্মদর্শী।

হ্যারির জন্ম থেকেই তিনি এটা জেনেছিলেন যে, বড় ভাই উইলিয়াম অসুস্থ হলেই হ্যারিকে, ‘অতিরিক্ত’ হিসেবে কাজে লাগানো হবে। অর্থাত্ উত্তরাধিকারীকে বাঁচাতে হ্যারি একটি ‘অতিরিক্ত অংশ’।

হ্যারি লিখেছেন যে, যদিও তাঁর মা ডায়না একজন প্রিন্সেস ছিলেন, দেবীর নামে নামকরণ করা হয়েছিল, তবে এই দুটি পদই তাঁর কাছে সবসময় দুর্বল, অপর্যাপ্ত বলে মনে হয়েছিল। লোকেরা নিয়মিতভাবে তাঁর মাকে আইকন এবং সাধুদের সঙ্গে তুলনা করেন—নেলসন ম্যান্ডেলা থেকে মাদার তেরেসা থেকে জোয়ান অফ আর্ক পর্যন্ত। কিন্তু এইধরনের প্রতিটি তুলনা তাঁর মনে বিশেষভাবে গেঁথে গিয়েছিল। মায়ের ব্যাপারে তিনি লিখেছেন, ‘দৈনন্দিন জীবনের বাইরের কেউ কীভাবে এত বাস্তব, এত স্পষ্টভাবে উপস্থিত, আমার মনে এত দুর্দান্তভাবে প্রাণবন্ত থাকতে পারে! এটা কীভাবে সম্ভব হলো যে আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি, রাজহাঁসটি সেই নীল হ্রদে আমার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো পরিষ্কার?’

সম্প্রতি হ্যারি বলেছেন যে তিনি তাঁর স্মৃতিচারণ অর্ধেক কেটে ফেলেছেন তাঁর পরিবারকে ‘বাঁচাতে’। লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রিন্স হ্যারি দাবি করেছেন যে ‘প্রথম খসড়াটি ভিন্ন ছিল। এটি ছিল ৮০০ পৃষ্ঠা, এবং এখন এটি ৪০০ পৃষ্ঠায় নেমে এসেছে।’ তিনি মনে করেন, কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে তাঁর এবং তাঁর ভাই ও বাবার মধ্যে—যা তিনি চাননি যে বিশ্ব জানুক। কারণ তিনি মনে করেন, সেটা প্রকাশ করলে তাঁরা তাঁকে ক্ষমা করবে না।

তবে তারপরও যা যা এসেছে, সেটাও বিশ্বের সবচাইতে অভিজাত ও রাজকীয় পরিবারের অন্দরের অনেক কিছুই প্রকাশ করে দিয়েছে। যেজন্য বইটি অর্জন করেছে বিশ্বের সবচাইতে দ্রুত বিক্রি হওয়া নন-ফিকশন বইয়ের রেকর্ড। হ্যারি যদিও এই বই থেকে অর্জিত সমুদয় অর্থ দাতব্য সংস্থায় দান করছেন। এই মহত্ত্বও তাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে নিঃসন্দেহে।

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040719509124756