নেপালে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন প্রচণ্ড নামে পরিচিত সাবেক মাওবাদী গেরিলা পুষ্প কমল দাহাল। হিন্দু রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক দশকব্যাপী বিদ্রোহের নেতৃত্বদানকারী এই নেতা রবিবার তৃতীয়বারের মতো দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন। প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তিনি সরকার গঠন করবেন।
এর কয়েক ঘণ্টা আগেই নেপালি কংগ্রেস পার্টির দেউবার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট থেকে ৬৮ বছর বয়সী প্রচণ্ড বিস্ময়করভাবে পদত্যাগ করেন।
দেউবা প্রধানমন্ত্রীর পদে প্রচণ্ডকে সমর্থন না দেওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেন। আরো কয়েক বছর ধরে পুরনো জোট অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেউবা এবং প্রচণ্ড দুজনই গত মাসের নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়েছেন।
দলীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিরোধী কমিউনিস্ট দল ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী (ইউএমএল) পার্টি এবং আরো কিছু ছোট দলের সমর্থনে পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে প্রথম আড়াই বছর সরকারের নেতৃত্ব দেবেন প্রচণ্ড।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নেপালি কংগ্রেস পার্টির শের বাহাদুর দেউবার স্থলাভিষিক্ত হওয়া প্রচণ্ড ২০২৫ সালে পদত্যাগ করবেন। এরপর ইউএমএলের একজন নেতা কার্যভার গ্রহণ করবেন।
প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীর সহযোগী টিকা ঢকাল প্রচণ্ডের নিয়োগ সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তার সমর্থনে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ’
নতুন জোটের বৈঠকের পর প্রচণ্ডের মাওবাদী কেন্দ্র পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেব গুরুং জানিয়েছেন, আপাতত এটিই বোঝাপোড়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য পদ ও মন্ত্রণালয় বণ্টনের বাকি কাজ এখনো করা হয়নি।
নেপালে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ২৭৫টি আসনের মধ্যে প্রচণ্ডের মাওবাদী কেন্দ্র দল ৩২টি আসন জিতেছে। ইউএমএল সমর্থন পেয়েছে ৭৮টি আসনে। ১৩৮টি আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য প্রয়োজনীয় আসন বাকি ছোট দলগুলো পূরণ করবে। অন্যদিকে নেপালি কংগ্রেস পার্টি ৮৯টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকবে।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, অংশীদারে অনেকগুলো জোট থাকায় দেশকে স্থিতিশীলতা দেওয়া প্রচণ্ডের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হবে। এ ছাড়া তিনি গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন বলেও সতর্ক করেছেন তারা।
২০০৮ সাল নেপালের ২৯৩ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে দেশটি এখন পর্যন্ত ১০টি সরকারের পরিবর্তন দেখেছে।
সূত্র : রয়টার্স