বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের আশ্বাসে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান ছেড়ে ফিরে গেছেন আন্দোলনরকারীরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত সোয়া ১১টায় হাসনাত-সারজিস বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে আন্দোলনরতরা বঙ্গভবন এলাকা ছাড়তে থাকেন। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মধ্যরাতের পরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও সেখানে বেশকিছু উৎসুক জনতার উপস্থিতি রয়েছে।
বঙ্গভবনের সামনে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে । নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সেনাবাহিনী। বিক্ষোভ চলাকালে এক শিক্ষার্থীসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া সাউন্ড গ্রেনেডে একজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ বিশাল (২০), ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম সেলিম (৪৫), সাংবাদিক রাজু আহমেদ (২৫) ও ভিডিও জার্নালিস্ট রিপন রেজা (২৮)। সাউন্ড গ্রেনেডে আহত আরিফ খান (২০) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এর আগে এদিন বিকেল থেকেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়।
এক পর্যায়ে গুলিস্তান আউটার স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে পুলিশের একটি বড় দল বঙ্গভবনের সামনে আসার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাদের পথ আটকায়। তাদের তোপের মুখে পুলিশ পিছু হটলে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এসময় হামলার মুখে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অস্ত্র ফেলে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেন।
তবে ঘটনার সময় আন্দোলকারীদের একটি অংশ পুলিশ সদস্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করে। তবে অপর একটি অংশকে পুলিশ সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। লাঠিসোটা দিয়ে পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায় তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ বেশ কয়েকজন। এরপর বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন তারা।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এই মূহুর্তে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে পদচ্যুত করা হলে সাংবিধানিক শুন্যতা তৈরি হবে। তাই সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর মো. সাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগী। তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে আন্তজার্তিক মহলে এমনটা প্রচারের সুযোগ পাবে শত্রুরা। সেনাপ্রধান দেশে ফিরলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা। এরপর বিক্ষোভকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।