বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুকুল আহমেদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতনের সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নির্যাতিত শিক্ষার্থী।
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রভোস্ট ও নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী মুকুল। যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে তারা হল তানজিদ মঞ্জু ও শিহাব উদ্দিন। তারা দু'জনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী। তারা দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
পরে উপাচার্যের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল কায়েসকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রিফাত ফেরদাউস ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজ আলম।
আরও পড়ুন : ববির সেই হাত ভাঙা ছাত্রের একান্ত সাক্ষাৎকার
মুকুল আহমেদের অভিযোগে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু হলের ৫০২০ নম্বর রুমের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী তিনি। গত ১২ অক্টোবর রাতে একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (৮ম ব্যাচ) শিক্ষার্থী তানজিদ মঞ্জু আমাকে কয়েকবার কল দিয়ে দেখা করার কথা বলে। রুম থেকে বের হলে আমার সঙ্গে মঞ্জুর দেখা হয়। সে আমাকে বঙ্গবন্ধু হলের ৪০১৯ নম্বর রুমে নিয়ে মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর তানজিদ মঞ্জু ও শিহাব উদ্দিন আমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে আমি বেহুঁশ হয়ে পড়ি। আনুমানিক রাত ৩টার দিকে আমার রুমমেট আহাদ খান রাফি আমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে আমাকে শেরেবাংলা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান যে, আমার বাম হাত খুব বাজেভাবে ভেঙে গেছে। বুকের পাঁজরও বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।
এই ধরনের বিকৃত মস্তিষ্কের শিক্ষার্থীরা যতদিন ক্যাম্পাসে থাকবে ততদিন পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনোই নিরাপদ বোধ করবে না বলে জানানো হয় অভিযোগপত্রে। তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী মুকুল।
এদিকে ওই ঘটনায় ৪০১৯ নম্বর কক্ষ সিলগালা করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেন।
তিনি জানান, ‘ওই কক্ষে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে জেনেছি। কক্ষটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম জানান, ‘এটি ঘৃণিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’