বরিশালে 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের হাতে আটককৃত ১৩ শিক্ষার্থীকে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বুধবার রাত ৮টায় দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (স্টাফ অফিসার) প্রণয় রায়।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'সকালে নগরীর সদর রোড ও কাকলির মোড় এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করে পুলিশ। ভবিষ্যতে আর জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে না এমন শর্তে তাদেরকে নিজ নিজ অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে'।
এর আগে সকালে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'র ব্যানারে 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এ সময় ১৩ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল ও আদালতের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকালে 'সারাদেশে ছাত্র হত্যার বিচার কর, গণগ্রেফতার বন্ধ কর' স্লোগানে কোটা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং নয় দফা মেনে নেয়ার দাবিতে টাউন হল প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করে আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনরত বিজন সিকদার জানায়, নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে বরিশালের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে। এ সময় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী এসে তাদের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শিক্ষার্থীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসে 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচি পালনের চেষ্টা চালায়। শেষে শিক্ষার্থীরা আদালতের মূল ফটকের সামনে এসে জড়ো হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পূণরায় শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে সাংবাদিকসহ ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১৩ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কয়েকজনকে নিজ জিম্মায় নেয়া ডা. মনীষা চক্রবর্তী দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ন্যক্কারজনক, নিন্দনীয়। কিন্তু বরিশালে আজ নারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুরুষ পুলিশ সদস্যরা যে ন্যক্কারজনকভাবে লাঠিপেটা করল এবং টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিল, তা সারা দেশে পুলিশের যে অপেশাদার আচরণ তারই বহিঃপ্রকাশ। এ ঘটনা শুধু নিন্দনীয়ই নয়, অগ্রহণযোগ্যও।’