বাংলা একাডেমিতে গিয়ে সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন অভিযোগ করে তাঁর অপসারণ দাবি করেছেন লেখক-শিল্পীরা। তাঁরা সচিবের এই 'অসৌজন্যমূলক আচরণে' উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে লেখক-শিল্পীরা বলেন, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী বাংলা একাডেমি একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে কার্যনির্বাহী পরিষদ। এই পরিষদে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তিনটি মন্ত্রণালয়ের সদস্য থাকেন। এছাড়া আছেন একাডেমির মহাপরিচালকসহ শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের অন্য সদস্যরা। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেন।
তাঁরা বলেন, কোনো অবস্থাতেই সংস্কৃতি সচিব একাডেমির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। কিন্তু গণমাধ্যমে এসেছে, সম্প্রতি সংস্কৃতি সচিব বাংলা একাডেমিতে গিয়ে একাডেমির কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বইমেলাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন। একাডেমির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘কিসের স্বায়ত্তশাসন! আপনারা সবাই মন্ত্রণালয়ের অধীন। আপনারা যদি সের হন, মন্ত্রণালয় সোয়া সের।’
বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁর এই অসৌজন্যমূলক আচরণে আমরা স্তম্ভিত, মর্মাহত। সচিব কার্যত মহান সংসদে পাস হওয়া আইন লঙ্ঘন করেছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এই সচিবকে অপসারণ করা হোক। শিল্প-সাহিত্যে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ চলবে না। আমরা চাই না ভবিষ্যতে বাংলা একাডেমির অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ হোক। আমরা চাই ইতিহাস-ঐতিহ্যবাহী, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাংলা একাডেমির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকুক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, মুক্তিযোদ্ধা ও চলচ্চিত্রকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ, কবি শামীম আজাদ, হাফিজ রশিদ খান, ফেরদৌস নাহার, খালেদ হোসাইন, শামীম রেজা, শোয়াইব জিবরান, হেনরী স্বপন, শামীম শাহানা, শাহেদ কায়েস, কাজল কানন, আহমেদ শিপলু, সাকিরা পারভীন, অতনু তিয়াস, অরবিন্দ চক্রবর্তী, হামিম কামাল, মীর রবি, শরাফত হোসেন, লোপা মমতাজ, শারমিনুর নাহার প্রমুখ।