বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ক্যাম্পাস যেন এক মশার স্বর্গরাজ্যে। আবাসিক হল, শ্রেণিকক্ষ, টিএসসি, মসজিদ ও খাবার হোটেলে অসহনীয় মাত্রায় বেড়েছে মশার উৎপাত। মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়াসহ নানা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। যত্রতত্র বেড়ে ওঠা ঝোপঝাড়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পয়ঃনিষ্কাশনের নর্দমা, ময়লার ভাগাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এবং নিয়মিত মশা নাশক না ছিটানোই মশার এ উৎপাতের জন্য দায়ী বলে মনে করেন তারা। তবে মশার উপদ্রবে দৃশত কোনো পদক্ষেপ নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশা খাঁ লেক ভরে গেছে কচুরিপানায়, যা আগে কোনো সময় ছিল না। এই লেকের পাশেই ছেলেদের ঈশা খাঁ হল, শহিদ জামাল হোসেন হল, শাহজালাল হল, শহীদ শামসুল হক হল ও শহীদ নাজমুল আহসান হল। কচুরিপানায় ভরা ওই জলাশয় হয়ে উঠেছে মশার উপযুক্ত উৎপত্তিস্থল। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, অনুষদ ভবন এবং মার্কেটের ড্রেনগুলোতে জমেছে ময়লার স্তূপ। এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোট-বড় ঝোপঝাড়। শিক্ষার্থীরা জানান, করোনাকালে মশা নিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নর্দমায় গাপ্পি, খলিশা, কইয়ের মতো লার্ভাভুক মাছ ছাড়া হয়েছিল। তবে এ বছর মশার এই তীব্র উৎপাতেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না।
ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. আবু তাহা জানান, স্থিরভাবে যেন বসায়ই যায় না, একটু স্থির হলেই মশা কামড়ায়। রুমে-বাইরে সব জায়গায়তেই একই অবস্থা। মশার অত্যাচারে বাধ্য হয়ে মশারি টানিয়ে পড়তে বসতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্য প্রতিষেধক শাখার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন নর্দমায় সংস্কার কাজ চলমান। এ কারণেই কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি আটকে থাকায় মশার উৎপত্তি বেশি হচ্ছে। বাজারের মশা নাশক দিয়েও খুব বেশি কাজ হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. নূরুল হায়দার রাসেল বলেন, মশার উপদ্রব কমাতে কেন্দ্রীয়ভাবে সব হল প্রাধক্ষ্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি প্রত্যেকটি হলের নিজস্ব ব্যাপার।