বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে যারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, তারা আবার এ রাষ্ট্র মেরামত করবে! মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। এ জন্যই তো আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
আজ সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটি এবং মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির যৌথ বৈঠকে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। দুর্নীতি ও লুটপাট করে কোষাগার খালি করেছে। রিজার্ভ ৪ বিলিয়ন ডলারেরও নিচে ছিল। শেখ হাসিনা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছেন।
বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে অনেকে রাষ্ট্র মেরামত করার প্রয়াস নিয়েছে। গতবারও ২৩ দল ছিল। এবার ৩৩ দল। বাম, ডান, এর মধ্যে প্রগতিশীল আর প্রতিক্রিয়াশীল একসঙ্গে হয়ে গেছে। সব এক কাতারে একাকার। লক্ষ্য কী? শেখ হাসিনাকে হটানো!
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘শুনেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশের কাউন্টার হিসেবে বিএনপির ভিশন-২০৩০। সেটা কোথায়? এখন তারা কর্মসূচি দিয়ে দেখাচ্ছে তারা আছে। তাদের নেতা-কর্মীরা বহুদিন ক্ষমতায় নেই, তাতেই খাই খাই ভাব। তাদের একটু খুশি রাখতে হবে। সে জন্য অনেক কথা বলছে।’
২৪ ডিসেম্বর সুশৃঙ্খল সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশবাসীকে দেখাতে চায় তারা আবারও দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত—এমনটা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) একটি সুশৃঙ্খল সম্মেলন দেখতে চান। জাতিকে দেখাতে চান—আওয়ামী লীগ আবারও এই দেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’
সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের পূর্বশর্ত শৃঙ্খলা। সভা করব সুশৃঙ্খল। আমার ধারণা, এবার ঐতিহাসিক সম্মেলন হবে। কারণ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যে গণজাগরণের ঢেউ, গোটা দেশ জেগে গেছে বিজয়ের মাসে। যেখানেই সমাবেশ করেছি, সেখানে স্রোতের মতো মানুষ। সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ যেন আছড়ে পড়েছে। এ রকম তরঙ্গ বিক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি।’
বিজয়ের মাসে সম্মেলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষের উপস্থিতি হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনাটাও ভালোভাবে করতে হবে। সম্মেলন সাদামাটা হবে। উপস্থিতি সাদামাটা হচ্ছে না। এটা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে। সাদামাটা সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা হবে।
কিছু কিছু সভা অতিথিদের নাম বলতে বলতেই সময় শেষ হয়ে যায় দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো নেতা অখুশি হবেন। এতে পরবর্তী সময়ে পদ পেতে সমস্যা হতে পারে—এসব চিন্তা করেও অনেকেই নাম বলেন। এগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কাউকে দুই মিনিট সময় দিলে তিনি পাঁচ মিনিটই সম্বোধন করতে করতে শেষ করে দেন। মাগরিবের নামাজের আজান দিচ্ছে, তখন প্রধান অতিথি সময় পান। প্রধান অতিথির বক্তব্য শ্রোতাদের শুনতে দিতে হবে। না হলে এটা তো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
মানুষের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে সংগতি রেখে পথ চলতে হবে উল্লেখ করে নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষ কী চাইছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম কাজ মানুষকে রক্ষা করা। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিয়েছেন করোনায়। এখনো (বৈশ্বিক সংকটে) বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
শৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা আছেন, তারা কজন জেলার তৃণমূল নেতাদের চেনেন, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অচেনা মুখ দিয়ে হবে না। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা আছেন, যারা জেলার সব নেতাকে চেনেন না।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও শৃঙ্খলা উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান প্রমুখ।