আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আগামীতে ক্ষমতায় গেলে খালেদা জিয়ার অঙ্গীকার শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হবে।
গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে চাকরি জাতীয়করণ দাবিতে ও শিক্ষক-কর্মচারী হয়রানি-নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত মহাসম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করাসহ তাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনার সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, টাকা ও দলীয় বিবেচনা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ হয় না। শিক্ষা পাঠ্যক্রমে শিক্ষা নেই। আর শিক্ষামন্ত্রীর লোকজন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুট করছে। শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করছে। এমনকি এ মন্ত্রীর লোকজন আজ বালু খেয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, যারা দুর্নীতি, অন্যায়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিচারক হয়ে দলীয়ভাবে বিচার করছে, যে ব্যবসায়ীরা চুরি করছেন সবাই ভিসানীতিতে আতঙ্কিত। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ছাপ দেখতে পারছি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মুখে। ডিগবাজিতে কোনো লাভ হবে না। রাজনৈতিকভাবে আপনার সময় হয়ে গেছে। দয়া করে মানে মানে কেটে পড়েন। তা না হলে জনগণ আপনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যে দুঃশাসনের মধ্যে পড়েছি, যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছে, মারছে, খুন করছে, হত্যা করছে, লুণ্ঠন করছে। এটাকে সরানোর দায়িত্ব কার? এই স্যাংশনের ওপর, ভিসানীতির ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে? অন্য কেউ করে দিয়ে যাবে? আমাদেরই করতে হবে। তারা (সরকার) ভালো কথা শুনছে না, শান্তির কথা শুনছে না। বারবার বলছি, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি, পদযাত্রা, রোডমার্চ, সমাবেশ করছি। চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনি। এখন শোনাতে হবে। শোনানোর জন্য যা কিছু করা দরকার তাই করতে হবে। দানবীয় সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য রাজপথে সমগ্র জাতিকে সোচ্চার হতে হবে। ইনশাল্লাহ আমরা বিজয়ী হবো।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো আহ্বান জানাচ্ছি, অনেক কষ্ট দিয়েছেন মানুষকে। অনেক ভাইকে হত্যা করেছেন, অনেকের স্বামী, অনেক বাবা-মাকে পুত্রহারা করেছেন। এবার মানে মানে দয়া করে বিদায় হোন। আপনাদের অপকর্মের জবাবদিহি একসময় করতে হবে। এখনই আপনি বিদায় হয়ে পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন এবং স্পষ্ট করে বলেছি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন।
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান বিএনপির কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বরখাস্ত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সাবেক অধ্যক্ষ মুগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ শিক্ষক নেতারা।