দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কর্মরত নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন ওই নারী চিকিৎসক।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, বিএসএমএমইউ’র নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন আরেক সহকর্মী চিকিৎসক। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আসামিকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক উল্লেখ করেছেন, ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী চিকিৎসককে তার রুমে ডাকতেন এবং বিভিন্ন অশ্লীল ও আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। ডা. শহীদুল্লাহ একটি হাসপাতাল করবেন এবং ভুক্তভোগীকে ওই হাসপাতালের অংশীদার করবেন বলেও প্রলোভন দেন।
আরেকদিন ভুক্তভোগীকে নিজের কক্ষে ডেকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে রাখেন ডা. শহীদুল্লাহ। এই ছবি দিয়ে নিয়মিত ভুক্তভোগীকে হুমকি দিতেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী হাসাপাতালের জন্য ডা. শহীদুল্লাহকে দুই দফায় ২০ লাখ টাকাও দেন।
গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের অ্যালামনাই রুমে ডা. শহীদুল্লাহ’র সঙ্গে ভুক্তভোগীর দেখা হলে তাকে একা পেয়ে জোর করে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। পরে ভুক্তভোগী বাঁচার চেষ্টা করলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক বলেন, আমি তিন বছর ধরে বিএসএমএমইউ’র সহকারী অধ্যাপক মনরোগ বিভাগ হিসেবে কর্মরত আছি। ডা. শহীদুল্লাহ বিভিন্ন সময় রুমে ডেকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতেন। আমার সিনিয়র তাই চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে আমি শুরুতে কিছুই জানাইনি। তারপরও তিনি আমাকে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে তার নিজের ডাকতেন, আমি এড়িয়ে যেতাম।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পরিবারের কাছে ছড়িয়ে দেবেন বলেও হুমকি দিতেন তিনি। আমি মান-সম্মানের ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চুপ থাকি। গত ২৫ জানুয়ারির ঘটনার পর বিষয়টি আমি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করি। এরই মাঝে আমার নামে আমার পরিবারের কাছেও ডা. শহীদুল্লাহ নানা অপপ্রচার করেছেন। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তাকে আমি মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত, আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত এবং অনভিপ্রেত। ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর। আগামীকাল শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তিনি উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নারী নির্যাতন সেল আছে, সেখানেও অভিযোগ করবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।