প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচারের নামে কোনো বিচারক যদি অবিচার করেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিচার বিভাগের কেউ দুর্নীতি করলে তাকে রাখা হবে না। দুর্নীতি একটা ক্যান্সার। আমার হাতে পাঁচটা আঙ্গুল আছে। যদি একটি আঙ্গুলে ক্যান্সার হয় তাহলে বড় চিকিৎসা হচ্ছে সেটা কেটে ফেলা। তাই যে জজ বিচার বিক্রি করবে, সেই জজের আঙ্গুল কেটে ফেলতে আমি একটুও দ্বিধাবোধ করবো না। একজন জজ যদি বিচারের মাধ্যমে একজনের সম্পদ অন্যজনের দিয়ে দেন, তাহলে সে ডাকাতের চেয়েও খারাপ।
বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, এমন অন্যায়ের জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। যদি কোনো জজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পান, জানালে সঙ্গে সঙ্গে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, ঝিনাইদহের বিষয়খালীর যুদ্ধ ইতিহাসের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ যা আমরা ভুলতে পারব না। ১৯৭১ এ বিষয়খালী ব্রিজের এ পাশে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছিলেন। আর অপরপাশে ছিল পাকিস্তানী বাহিনী। সেখানে দীর্ঘ সময় পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়েছিলো যা আমাদের ভুলবার নয়।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার তোফায়েল হাসান, জেলা প্রশাসক এস.এম রফিকুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা জজ নাজিমুদৌলা, পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকিদুল ইসলাম, সরকারি কৌশুলী বিকাশ কুমার ঘোষ ও পিপি অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পরে বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ আদালত প্রাঙ্গনে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো এই দেশের জনগণ যাতে স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে ন্যায় বিচার লাভ করেন।
এই রাষ্ট্রের মালিক ১৭ কোটি মানুষ। এই ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪ কোটি মানুষ নিত্যদিন আদালত চত্বরে আসেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়। যেহেতু এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, সেহেতু মানুষ যাতে আদালতে এসে বসতে পারেন, তারা যাতে বুঝতে পারেন এই জায়গাটি তাদের। সেই জন্য প্রায় প্রতিটি জেলায় বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।তিনি বলেন, আদালতগুলোতে যে মামলা জট সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত ছাড়াতে বিচারকদের বলা হয়েছে, যাতে মানুষ ন্যায়বিচার পান।