দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি : নিজের সঙ্গে হওয়া যৌন হয়রানির বিচার পেতে বিভাগের চেয়ারম্যানকে প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ছাত্রী কাজী ফারজানা মীম। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মীম বলেন, আমি চাচ্ছি, আমার সঙ্গে হওয়ায় যৌন হয়রানিমূলক আচরণের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক। কিন্তু আমার বিচার পেতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আমার বিভাগের চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান সব জায়গায় অভিযুক্ত সাহেদ পারভেজ ইমনকে নিয়ে যাচ্ছেন। দুজন একসঙ্গে সব জায়গায় যাচ্ছেন। উনি যদি অন্যায়কে সাপোর্ট করেন তাহলে আর কিছু বলার থাকে না, যোগ করেন তিনি।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে হওয়া যৌন হয়রানির অভিযোগ তিনি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে কেনো দিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ২০১৯-এর নভেম্বরে এই ঘটনা ঘটে। আমি প্রথমে চেইন অব কমান্ড মেনে আমার বিভাগের চেয়ারম্যানকে জানাই। এরপর ২০২০-এর মার্চে কোভিড এলো । সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলো। আমি তখন কীভাবে কার কাছে আমার অভিযোগ জানাবো? ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ইমন স্যার আমাকে আবার ক্লাসে বুলিং করেন। তখন আমি সবকিছু একত্রিত করে প্রক্টরকে জানাই।
তিনি আরো বলেন, তিনি (অভিযুক্ত শিক্ষক) আমাকে প্রথমে বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেন। আমি বলি স্যার কী জাতীয় বন্ধুত্ব? এরপর উনি আমাকে জোর করে বসেন। মানে অ্যাটেম্প টু রেইপ।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য মীমকে চাপ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি যখন অভিযোগ দিয়েছি, তখন থেকেই আমার এই অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য আমাকে চাপ দেয়া হয়েছে। আমার বিভাগের চেয়ারম্যান তার রুমে আমাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় এই বিষয়ে বলেছেন। আমার বিচার পেতে তিনি প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
ক্যাম্পাসে নিরাপদ বোধ করেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাম্পাস আমার ঘর। এই ঘটনার পর থেকে আমি ক্যাম্পাসে আসা কমিয়ে দিয়েছি। আমাকে আগে যে হুমকি দেয়া হচ্ছিলো, ডিবি অফিস থেকে আসার পর থেকে আমি আর হুমকি-ধামকি পাইনি। এজন্য আমি আজ কাম্পাসে। আশা করি আজ থেকে আমি ফাইরুজ অবন্তিকার হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারবো।
পরে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম বলেন, আজকেও আমার নতুন তদন্তে কমিটির প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, এ অভিযোগ যদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় তবে যেনো যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আমার কথা হলো তদন্ত যেনো ইমপার্শিয়াল হয়। অভিযোগকারীকেও যেনো সন্দেহের ঊর্ধ্বে না রাখা হয়৷ আমি চাই সে যদি আসলেই দোষী হয় তার শাস্তি হোক, আর যদি দোষ না করে থাকে তাহলে যেনো দোষী প্রমাণিত না হয়।