দক্ষ, উৎকর্ষ ও বিজ্ঞানমুখী নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের আগামী প্রজন্ম হোক দক্ষ, উৎকর্ষ, মানবিক, দেশপ্রেমিক এবং বিশ্বমানের। তাদের চিন্তা চেতনায় গভীর দেশপ্রেম মমত্ববোধ থাকতে হবে। বিজ্ঞান চেতনা ও সৃজনশীলতায় এই প্রজন্ম অপূর্ব শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠুক এটি আমাদের সম্মিলিত চাওয়া।
শনিবার রাজধানীর একটি সম্মেলন কক্ষে ‘বিশেষ সিনেট অধিবেশন-২০২৩’ এ সিনেট চেয়ারম্যানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি, জ্ঞান ও সৃজনশীলতার সমাজ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষার উৎকর্ষতা নিশ্চিত করার অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। যে দেশের অনুপ্রেরণার নাম বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, লালন-সে দেশকে অন্যকোনো পরাশক্তির পরামর্শ ব্যতিরেকেই আত্মমর্যাদায় নিজেদেরকে বলীয়ান করার সক্ষমতা রয়েছে।
গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন থেকে শুরু করে শিক্ষার উন্নয়ন ও উৎকর্ষতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ হবে আত্মমর্যাদার সেরা এক জাতিরাষ্ট্র, যোগ করেন তিনি।
এই বিশেষ সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত সিনেটের ২৫তম অধিবেশনের পর থেকে এ পর্যন্ত গৃহীত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের বিভিন্ন বিবরণ সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন।
ড. মশিউর রহমান বলেন, এই প্রজন্মকে আলোকিত করে গড়ে তোলায় শ্রেণি কক্ষে নেয়া, পাঠদানে আধুনিক সকল ব্যবস্থাপনায় আনা, আর বই পড়ায় অভ্যস্ত করে জ্ঞান প্রবাহের সম্মিলনে নিয়ে আসা আমাদের একান্ত চাওয়া।
সিনেট চেয়ারম্যান বলেন, সার্বিক উন্নয়নের মহাপরিকল্পনাসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক, আদর্শনিষ্ঠ, মানবিক রাষ্ট্র দর্শনের অভিপ্রায় নিয়ে নতুন উচ্চতায় বাংলাদেশ আত্মপ্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। এ পথ অমসৃণ, চ্যালেঞ্জিং এবং বিশ^রাজনীতির প্রেক্ষিতে এ উত্তরণও সহজ সাধ্য নয়। অগ্রসরমান কাজের পথে বাধাবিঘ্নের মুখোমুখি আমরা হই বটে, তবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রিয় স্বদেশ অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে ভরপুর। আসুন, সেই অপরিমেয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি, জ্ঞান ও সৃজনশীলতার সমাজ বিনির্মাণ করে সকল অশুভকে পদানত করে বিজয় নিশ্চিত করি-শুভের, সুন্দরের, সত্যের আর জ্ঞানের আলোর।
বিশেষ এ সিনেট অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়াসহ ১৬ জন সিনেট সদস্য।