বিডিবিএল সোনালী ব্যাংকে, রাকাব কৃষিতে একীভূত হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

বিডিবিএল সোনালী ব্যাংকে, রাকাব কৃষিতে একীভূত হচ্ছে

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে এবার উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এসব ব্যাংকের এমডিকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।  সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি অ্যাডভাইজর আবু ফরাহ মো. নাছের এবং সরকারি চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা বলা হয়েছে বৈঠক থেকে। এর আগে আনুষ্ঠানিকতার জন্য এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ওবায়দুল্লাহ রনি। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এর আগে বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ভঙ্গুর পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এই দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গতকাল আলোচিত ব্যাংকগুলোর সমঝোতা স্মারক সই হবে। তবে এ বিষয়ে আপাতত সবাইকে মুখে কুলুপ দিতে বলা হয়েছে।

সূত্রের দাবি, রাষ্ট্রীয় মালিকানার বেসিক ব্যাংকও একীভূতকরণের আলোচনায় রয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানার আরেক বড় ব্যাংক অগ্রণীর সঙ্গে বেসিককে এক করে দেওয়া হতে পারে। সরকারি ব্যাংকের বাইরে সমস্যাগ্রস্ত পদ্মা ছাড়াও বেসরকারি খাতের আরও ৮টি ব্যাংক একীভূতকরণের আলোচনা রয়েছে। এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা বর্তমানের ৬১ থেকে কমিয়ে ৫০ বা তার নিচে নামানো হবে বলে জানা গেছে। 

তবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে এসব খারাপ ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এ খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে একীভূতকরণের পরামর্শ দিয়েছে। জোরপূর্বক একীভূতকরণ না করার কথা বলেছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আগামী বছরের মার্চ থেকে খারাপ ব্যাংক জোরপূর্বক ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হবে। একীভূতকরণের আগে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য চারটি সূচকের ভিত্তিতে একটি পিসিএ ফ্রেমওয়ার্ক ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো ব্যাংক নিজ থেকে এক হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একীভূতকরণের মাধ্যমে খারাপ ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে পুরো খাতের চিত্র ভালো দেখানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ কমানো, মূলধন পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনার ক্ষেত্রে আইএমএফের চাপ রয়েছে। আবার বর্তমানের আস্থাহীনতা কাটিয়ে তারল্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্য একীভূতকরণকে ভালো বিকল্প মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহে সরকারি চার ব্যাংকের একীভূতকরণ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে গোপনে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং পলিসি অ্যাডভাইজর ছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে কাউকে এসব আলোচনায় রাখা হচ্ছে না। এ কারণে কোন ব্যাংক কার সঙ্গে একীভূত করা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, সব আমানতকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যাংক একীভূতকরণের মাধ্যমে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের দায় ও সম্পদ মিলিয়ে দেওয়া হবে। তবে ভালো ব্যাংক যেন চাপে না পড়ে, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতি-সহায়তা দেবে। এ ক্ষেত্রে খারাপ ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) এবং বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণে (এসএলআর) ছাড় দিতে পারে। আবার খেলাপি ঋণের বিপরীতে সাধারণভাবে যে হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে হয়, এ ক্ষেত্রে রাখতে হবে কম। এ ছাড়া ভালো ব্যাংকে এসেই সব গ্রাহকের যেন আমানত ফেরত নেওয়ার চাপ তৈরি না হয়, সে জন্যও একটি ব্যবস্থা রাখা হবে। সার্বিক বিষয় উল্লেখ করে ঈদের আগে একটি নীতিমালা জারি হতে পারে।

গতকালের বৈঠকে উপস্থিত এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। তার আগে আমাদের পর্যায় থেকে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে দুই কৃষি ব্যাংকের আইনে বলা আছে, স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। এ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংকের আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।

আর্থিক সূচকে কার কী হাল

একীভূত হতে যাওয়া সরকারি চারটি ব্যাংকের আর্থিক সূচকের অবস্থা খুবই খারাপ। সোনালীর সঙ্গে একীভূত হতে যাওয়া বিডিবিএল গঠন হয় বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থা এক করে। একীভূত করেও ব্যাংকটির আর্থিক সূচকের কোনো উন্নতি হয়নি। আর বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকও অতীতে একসঙ্গে ছিল। তাদের পরিস্থিতি ভালো করার জন্য আলাদা করা হলেও কোনো সুফল মেলেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ৯৩ হাজার ৯৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়েছে ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা মোট ঋণের ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তবে ডেফারেল সুবিধার কারণে কোনো মূলধন ঘাটতি নেই। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের মোট ঋণের ৯৮২ কোটি টাকা বা ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি। এ পরিমাণ ঋণের বিপরীতে কোনো আয় না পেলেও পুরো আমানতের বিপরীতে সুদ গুনতে হয় ব্যাংককে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৩১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর মূলধন ঘাটতি রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে আর কোনো ব্যাংকের এত ঘাটতি নেই। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ঋণখেলাপি। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

জানা গেছে, এসব ব্যাংক ছাড়াও একীভূতকরণের আলোচনায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, এবি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক এবং বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। 

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এবি ব্যাংকের ৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা বা ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ ঋণ খেলাপি। ন্যাশনাল ব্যাংকের ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৯০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ৬৮৭ কোটি টাকা বা প্রায় ৮৭ শতাংশ। বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ১ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ১ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা বা ৯৮ দশমিক ২২ শতাংশ।

সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি - dainik shiksha সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি - dainik shiksha ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ - dainik shiksha অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি - dainik shiksha আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0077481269836426