দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : কবি আবুবকর সিদ্দিক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
আবুবকর সিদ্দিকের মেয়ে বিদিশা সিদ্দিক তার বাবার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খুলনার সিটি হাসপাতালে আবুবকর সিদ্দিকের মৃত্যু হয়। এর আগে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার রাতে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে) স্থানান্তর করা হয়।
আজ খুলনার হাদিস পার্কে বাদ জোহর কবি আবুবকর সিদ্দিকের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। খুলনাতেই তার দাফন হবে।
আবুবকর সিদ্দিক ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট বাগেরহাটের গোটাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মতিয়র রহমান পাটোয়ারী সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন এবং মা মতিবিবি ছিলেন গৃহিণী। পৈতৃক নিবাস ছিল বাগেরহাট জেলার বৈটপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন আবুবকর সিদ্দিক। চাখার ফজলুল হক কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে বি এল কলেজ, পিসি কলেজ, ফকিরহাট কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। এরপর দীর্ঘদিন তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর ঢাকার নটর ডেম কলেজ ও কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
আবুবকর সিদ্দিক একাধিক উপন্যাস লিখেছেন। তিনি ছোট গল্পকার ও সাহিত্য সমালোচক ছিলেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য আবুবকর সিদ্দিক ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। এ ছাড়া বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, বঙ্গভাষা সংস্কৃতি প্রচার সমিতি পুরস্কারসহ (কলকাতা) আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
কবি আবুবকর সিদ্দিকের কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে আছে ‘ধবল দুধের স্বরগ্রাম’, ‘বিনিদ্র কালের ভেলা’, ‘হে লোকসভ্যতা’, ‘শ্যামল যাযাবর’, ‘মানব হাড়ের হিম ও বিদ্যুৎ’ এবং ‘মনীষাকে ডেকে ডেকে’। তাঁর লেখা উপন্যাসগুলো হলো ‘জলরাক্ষস’, ‘খরাদাহ’, ‘বারুদপোড়া প্রহর’ এবং ‘একাত্তরের হৃদভস্ম’। ছোটগল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ভূমিহীন দেশ’, ‘চরবিনাশকাল’।