মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা সদরের শ্রীপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বাঁশ দিয়ে আটকে রাখা বিমের নিচ বরাবর ঝুলন্ত পার্টিশন ওয়াল ভেঙে বিদ্যালয়ের ৮ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা পৌনে একটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা শিক্ষার্থীরা হলো- রিথি (১৩), আম্বিয়া (১৪), রিয়া (১৩), আশরাদা জান্নাত (১৩), নুপুর (১৩), নাদিয়া (১২), মিতু (১৩) ও মমি (১৩)। আহত ৮ শিক্ষার্থীর ৬ জনকে শ্রীপুর উপজেলা সদরের ডিজিটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুই শিক্ষার্থী রিয়া ও নুপুর খাতুনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রীপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যািলয়ের লাইব্রেরিন কায়কোবাদ হোসেন বলেন, একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলায় শনিবার ৪০১ নং কক্ষে সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষা চলছিল। আনুমানিক পৌনে একটার দিকে হঠাৎ বাঁশ দিয়ে আটকে রাখা বিমের নিচের ঝুলন্ত পার্টিশন ওয়ালের বাকি অংশ ভেঙে বড় বড় ইটের টুকরো পড়ে যায়। এতে ৭ থেকে ৮ জন ছাত্রী আহত হয়েছে।
ঘটনার সময় অন্য কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় শুধু লাইব্রেরিয়ান কায়কোবাদ হোসেন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি নিজে স্বীকার করেছেন।
বেলা দেড়টার দিকে সাংবাদিকরা ডিজিটাল হাসপতালে গিয়ে দেখতে পান, ভয়ে-আতংকে অনেক ছাত্রী কান্না করছেন। এ সময় অনেক অভিভাবককে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। অনেক অভিভাবক এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশও করেন।
এ সময় ডিজিটাল হাসপাতালের চিকিৎসক পরিমল বিশ্বাস বলেন, একজন ছাত্রীর ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে। অস্ত্রপচারের জন্য আমরা দ্রুতই তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিব। বাকিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত এক ছাত্রীর বাবা নাসিরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়াল পুরোটা না ভেঙে শুধু মাত্র বাঁশ দিয়ে আটকে রাখাটা কোন ভাবেই বিবেচনা প্রসূত কাজ হতে পারে না। অন্য কক্ষে না নিয়ে সেখানে কেন ছাত্রীদের বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে? প্রাণহানি ঘটলে তো সেই বাবা-মার এ ক্ষতি হতো।
এই বিষয়ে শ্রীপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার অধিকারী বলেন, আমি এখন বাইরে আছি। ঘটনার বিষয়ে শুনেছি।
খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের একটি টিম ডিজিটাল হাসপাতালে আহত ছাত্রীদের দেখতে ছুটে আসেন। এ সময় শ্রীপুর থানার ওসি (তদন্ত) গৌতম ঠাকুর বলেন, বিমের নিচের পার্টিশন ওয়ালের পুরোটা না ভেঙে খানিকটা ঝুলন্ত ওয়াল বাঁশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছিল, যা মোটেও সঠিক কাজ হয়নি। এতে অনেক বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারতো।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: মমতাজ মহলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।